হঠাৎ করে যে কেউ যে কোনো পরিস্থিতিতে হাত-পা ছুড়ে, দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। খিঁচুনির সময় দাঁত দিয়ে জিভ কাটা, প্রস্রাব বা মলত্যাগের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। মুখ দিয়ে ফেনা বা লালা পড়া, এমনকি হাত-মুখ নীল হয়ে যেতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খিঁচুনি হলে আমরা তাকে মৃগী রোগ মনে করি। এ ছাড়া আরও অনেক কারণে খিঁচুনি হতে পারে।
অনেক সময় অল্প বয়সী মেয়েরা খিঁচুনির মতো হাত-পা বাঁকা করে বিছানায় ঝাঁকি দেয়, মুখ দিয়ে আওয়াজ ও কান্নাকাটি করে। এটিকে সিউডোসিজার বা ছদ্ম খিঁচুনি বলা হয়। অনেক সময় পারিবারিক সমস্যা, টেনশন বা ট্রমা থেকে এ রকম হতে পারে। এ ছাড়া মস্তিষ্কের কিছু সমস্যা, যেমন– মস্তিষ্কের প্রদাহ, আঘাতজনিত সমস্যা, টিউমার, স্ট্রোক প্রভৃতি এবং রক্তে লবণের পরিমাণ অস্বাভাবিকতা, শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণেও খিঁচুনি হতে পারে।
ইইজি, সিটিস্ক্যান, এমআরআই করে মস্তিষ্কের রোগ আলাদা করা যায়। এ ছাড়া খিঁচুনির কারণে রক্তে লবণ, গ্লুকোজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লিভার এবং কিডনি রোগের পরীক্ষা ও ইসিজি করার প্রয়োজন হয়।
চিকিৎসা
প্রাথমিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে খিঁচুনির সময় শান্ত থাকুন; অস্থির বা আতঙ্কিত হবেন না। 
 রোগীর মুখে চামচ বা আঙুল দেবেন না। 
 রোগীর মাথা বা চোখে-মুখে পানি দেওয়া কিংবা হাতে-পায়ে চেপে ধরার দরকার নেই। 
 রোগীকে আগুন, পানি, যন্ত্র, তীক্ষ্ণ ধারালো বা শক্ত বস্তু থেকে দূরে রাখুন।
 খিঁচুনি বন্ধ হলে রোগীকে একদিকে কাত করে দিন। রোগীর মাথার নিচে কুশন বা বালিশ দিন। কিছু পাওয়া না গেলে ভাঁজ করে কাপড় বা সাহায্যকারীর হাত ব্যবহার করুন।
 খিঁচুনি ৫ মিনিটের বেশি থাকলে অথবা জ্ঞান না ফিরলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিতে হবে। 
চিকিৎসা
মৃগী রোগীর সুচিকিৎসা আছে। যাদের খিঁচুনিজনিত সমস্যা আছে, তাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। যেমন–
 একা একা পুকুরে গোসল করা, সাইকেল, গাড়ি চালানো, নৌকা ভ্রমণ, মাছ ধরা যাবে না।
 যেসব কারণে খিঁচুনি বাড়ে, যেমন– আলো, শব্দ, গরম থেকে দূরে থাকবে।
 মেশিনে কাজ করা বা আগুনের সামনে কাজ ও ড্রাইভিং পেশা থাকলে তা পরিবর্তন করতে হবে। 
লেখক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’