‘রাক্ষুইস্যা গাঙ্গ সবকিছু গিইল্লা খাইছে। একটা সময় ঘরবাড়ি, জমিজমা, গরু-ছাগলসহ সব ছিল। সহায়সম্বল সব গিইল্লা খাইলো গাঙ্গে। এই জীবনে ৩০ বার ভিটা ভাঙছে। মনে করছিলাম, এই ভিটাতে মরব। কিন্তু তা আর হইল না। শেষ বয়সে আইস্যা নতুন কইরা আবার ভিটা হারা হইলাম।’ নদীভাঙনে ভিটেমাটিসহ অবশিষ্ট জমিজমা হারানোর আশঙ্কায় আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বললেন ৬২ বছর বয়সী রহিমা বেগম। তিনি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চরডাকাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

সম্প্রতি যমুনা নদী ভাঙনকবলিত এলাকাটিতে তাঁর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর প্রতিবেদকের। রহিমা বেগমের সাত সন্তান। সন্তানদের কাছেই থাকেন তিনি। দেখা যায়, যমুনা নদীর ভাঙনে এক সন্তানের ঘরসহ ভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে বাকি ছয় সন্তানের বসতভিটা। ভাঙনের একদম কাছেই খোলা আকাশের নিচে তাঁর এক পুত্রবধূ দুপুরের রান্না করছিলেন। তাঁর অন্য স্বজনেরা ঘরবাড়ি সরাতে ব্যস্ত। নদীর তীর থেকে কিছুক্ষণ পরপর ভাঙনের শব্দ কানে ভেসে আসছিল। তীরের কাছে গিয়ে দেখা গেল, বিশাল আকার ধরে পাড় ভেঙে পড়ছে।

তীরের কাছে আকা মিয়ার বসতভিটা। তবে কোনো ঘর নেই। সব স্থাপনা ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পড়ে আছে বসতবাড়ির ভিটার জমি। হয়তো অল্প সময়ের মধ্যে নদীগর্ভে চলে যাবে সেটি। কয়েক মাস ধরে ভাঙন চললেও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভাঙন রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেয়নি, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয় লোকজনের।

কয়েক মাস ধরে ভাঙন চললেও ২৮ মার্চ থেকে ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করে। রহিমা বেগমের বড় ছেলে মো.

ওবায়দুল, প্রতিবেশী আলমাস মিয়া, আমজাদ হোসেন, মো. মোখলেছুর রহমান, মোশারফ হোসেন, হামিদুর রহমান, আকা মিয়া ও রাসেল মিয়ার বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। এ ছাড়া চর ডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর মাগুরিহাট কমিউনিটি ক্লিনিক, চর ডাকাতিয়াপাড়া বড় সেতু, চর ডাকাতিয়াপাড়া জামে মসজিদ, চর ডাকাতিয়াপাড়া মাদ্রাসাসহ তিন শতাধিক বসতভিটা হুমকির মুখে। ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করলে, যেকোনো সময় ওই সব স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে।

বসতভিটাটিতে সাত ছেলেসহ নাতি-নাতনিদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন বৃদ্ধা রহিমা বেগম। এক যুগ আগে সর্বশেষ বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। এর আগে ৩০ বার তাঁর বাড়ি গ্রাস করে নেয় যমুনা। তিনি বলেন, কম বয়সেই বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী শরাফ উদ্দিনরা সাত ভাই ছিলেন। ওই গ্রামের মধ্যে তাঁদের পরিবারটিই ধনাঢ্য ছিল। বিয়ের পর থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ৩০ দফা নদীভাঙনে তাঁদের জমি বিলীন হয়েছে। যেটুকু ভিটে টিকে ছিল, সেটুকুও বিলীন হওয়ার পথে। কোথায় যাবেন, এই মুহূর্তে কোনো উপায় দেখছেন না তিনি।

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় যমুনা নদীর ভাঙনের মুখে অনেক পরিবার বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর ডাকাতিয়াপাড়া গ্রামে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বসতভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট

অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।  

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।  

আরো পড়ুন:

আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা

‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন। 

এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”  

হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”   

এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।  

সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।  

রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।  

এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।  

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ