পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে ইরান নতি স্বীকার করবে না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে চাইলে তেহরানকে অবশ্যই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে।

আগামী শনিবার মাসকাটে দ্বিতীয় দফা আলোচনা শুরুর আগে এ দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। তবে ইরান বলেছে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকারের বিষয়টি বাতিল করা নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। গতকাল ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এ কথা বলেন।

উইটকফের মন্তব্য তাঁর আগের দিন করা মন্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ, উইটকফ আগের দিন বলেছিলেন, ইরান শক্তি উৎপাদনের জন্য যদি খুব কম পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে, তাহলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি থাকবে না। অথচ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে উইটকফ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য যেকোনো চূড়ান্ত ব্যবস্থার মধ্যে একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে। যার অর্থ ইরানকে তার পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ এবং অস্ত্রায়ণ কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে।

উইটকফ জানিয়েছেন, ‘বিশ্বের জন্য এটা অপরিহার্য যে আমরা একটি কঠিন ও ন্যায্য চুক্তি করব, যা টেকসই হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে এটিই করতে বলেছেন।’ উইটকফের মতো একই কথা বলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাতিল চায় বলে জানায় স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

উইটকফের মন্তব্যের জবাবে আরাগচি বলেন, ‘আমরা উইটকফের কাছ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য শুনেছি, তবে আলোচনার টেবিলে আসল অবস্থান স্পষ্ট করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে সম্ভাব্য উদ্বেগের বিষয়ে আমরা আস্থা তৈরি করতে প্রস্তুত। তবে সমৃদ্ধকরণের নীতি আপসযোগ্য নয়।’

ক্রেমলিন গতকাল জানিয়েছে, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে চলমান অচলাবস্থার কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে রাশিয়া তার ক্ষমতায় সবকিছু করতে প্রস্তুত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইটকফ র র ইউর ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ