রাজধানী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা অনুপাতে যত সংখ্যক পার্ক বা খেলার মাঠ দরকার, তা তো নেই-ই, বরং যা আছে, সেগুলোর ব্যবহারেও নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। কিছুদিন আগেই আমরা দেখলাম ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনের কয়েকটি পার্ক দখল করে অনুমোদন ছাড়াই মেলা বসানোর খবর। আর রাজধানীর ফার্মগেটের একটি উদ্যান যে মেট্রোরেলের কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের জন্য একপ্রকার হারিয়ে যেতে বসেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ উদ্যান আবার কবে ফিরে পাবে স্থানীয় বাসিন্দারা?

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ফার্মগেটের শহীদ আনোয়ারা উদ্যান ২০১৮ সাল থেকে ব্যবহার করছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শেষে উদ্যানটি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ২০২৩ সালে উদ্যানের জায়গায় একটি স্টেশন প্লাজা নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানায় ডিএমটিসিএল। পরিকল্পনা অনুসারে স্টেশন প্লাজাটিতে দোকান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, কফিশপ, বিনোদনকেন্দ্রসহ শিশুদের বিনোদন ও খেলার ব্যবস্থা থাকার কথা। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং উদ্যানটি পুনরুদ্ধারের দাবিতে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন নগরবিদ ও পরিবেশ সংগঠকেরা।

আশার কথা হলো, উদ্যানটি আবার সংস্কার ও সবুজায়ন করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। গত বছরের ডিসেম্বরে এ প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও দুই উপদেষ্টা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

দুঃখজনক হচ্ছে, কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও উদ্যানটি চালু করা যায়নি। নগর-পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনকারীরা বলছেন, উদ্যানটিতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের যে স্থাপনাসহ সরঞ্জাম রয়েছে, চাইলে তা এক সপ্তাহের মধ্যে সরিয়ে ফেলা সম্ভব। এরপরও কেন তা করা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ সংগঠকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, উদ্যানে কিছু কাজ আছে, তা শেষ হলে আগামী জুনের মধ্যে উদ্যানের পশ্চিম অংশ খালি করে দেওয়া হবে। আমরা তাঁর প্রতি আস্থা রাখতে চাই। উদ্যানটি আবার সবুজায়ন করে চালু করতে আর সময়ক্ষেপণ হবে না, সেটিই কাম্য।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

শনি গ্রহের একাধিক চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের সন্ধান

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনি গ্রহের আটটি মাঝারি আকারের চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড শনাক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে মিমাস, এনসেলাডাস, ডায়োন, টেথিস, রিয়া, হাইপেরিয়ন, লাপেটাস ও ফিবি নামের চাঁদগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের তথ্য টেলিস্কোপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি চাঁদগুলোর ওপরে নিয়মিত নজরও রাখছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ডায়োন ও রিয়া চাঁদে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড শনির প্রধান বলয়ের বরফের অনুরূপ। ফিবি চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড জৈব পদার্থের বিকিরণের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়ে থাকে। লাপেটাস ও হাইপেরিয়নের অন্ধকার অঞ্চলে কার্বন ডাই–অক্সাইড দেখা যায়। বরফযুক্ত এসব চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও তাঁর সহকর্মীরা এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, কঠিন কার্বন ডাই–অক্সাইড সৌরজগতের প্রান্তসীমার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। যদিও সেই অবস্থানে কার্বন ডাই–অক্সাইড স্থিতিশীল নয়। আমরা শনির উপগ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থান জানার মাধ্যমে ভিন্ন পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন গ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইড কীভাবে আটকে আছে, তা জানার সুযোগ আছে এখানে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনির চাঁদে আটকে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড থেকে আদর্শ ল্যাবের মতো তথ্য পাওয়া যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, শনি গ্রহের বিভিন্ন চাঁদে কমপক্ষে দুটি পৃথক উৎস থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড তৈরি হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ