রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সকাল থেকে বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টিপাতের এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এমন কী, আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে ঢাকাসহ দেশের ১৫ জেলায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া সংশোধিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এসব জেলার নদীবন্দরে সতর্ক সংকেতও দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, ‍বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ঢাকা ছাড়াও রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেটের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ধান মাড়াইয়ের সময় বজ্রপাত, নারীর মৃত্যু

গাজীপুরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ২ কৃষকের

আজ বৃহস্পতিবার বিকালের মধ্যে দেশের ২৭ জেলায় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই অবস্থায় নিরাপদ থাকতে বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বজ্রপাতের সতর্কবার্তায় এসব পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার মধ্যে নবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ভোলা, বরগুনা, নোয়াখালী, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এই অবস্থায় বজ্রপাতের সময় ১০টি বিষয়ের ওপর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এগুলো হলো- বজ্রপাত হলে ঘরের মধ্যে থাকুন। জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন। সম্ভব হলে যাত্রা এড়িয়ে চলুন। নিরাপদ আশ্রয়ে থাকুন। গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না। কংক্রিটের মেঝেতে শয়ন করবেন না এবং কংক্রিটের দেয়ালে হেলান দেবেন না। বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর প্ল্যাগ খুলে দিন। জলাশয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উঠে আসুন। বিদ্যুৎ পরিবাহক বস্তু থেকে দূরে থাকুন। শিলাবৃষ্টির সময় ঘরে অবস্থান করুন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঝড় সহ ব ষ ট সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ