সাধারণত বয়সভিত্তিক দলগুলোর ক্যাম্প ঢাকাতেই হয়ে থাকে। তবে এবার ভিন্ন পথে হেঁটেছে বাফুফে। প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে যশোরে শুরু হলো জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প। 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে যশোর শামস-উল-হুদা একাডেমিতে এই ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। 

দেশসেরা কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের অধীনে দুই সপ্তাহের ৩৫ ফুটবলারকে নিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্যাম্প। দলে জায়গা করে নিতে বাফুফের ট্রায়াল দিতে আসা তিন প্রবাসী ফুটবলারও যোগ দিয়েছেন। এলিট একাডেমির ফুটবলারদের সঙ্গেই অনুশীলন করছেন তারা। 

প্রথম দিন শারিরিক অনুশীলনের সঙ্গে সেরে ফেলেছেন প্রস্তুতি একটি ম্যাচও। সংশ্লিষ্টরা জানালেন, উন্নত সুযোগ-সুবিধা ও নিরবচ্ছিন্ন পরিবেশের কারণেই অনুশীলনের জন্য শামস-উল-হুদা একাডেমিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে এই ক্যাম্পটি আগামি সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে ভূমিকা রাখবে। 

জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলের খেলোয়াড় নাজমুল হুদা ফয়সাল বলেন, ‘‘শামস-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির মাঠের কথা অনেক শুনেছি। আসলেই অনেক সুন্দর একটি মাঠ। টিমে না থাকলে এমন সুন্দর মাঠে খেলার সুযোগ হতো না। ধন্যবাদ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে।’’

অপর এক খেলোয়াড় আব্দুল কাদির বলেন, ‘‘যশোরে এমন সুন্দর পরিবেশে আশা করছি সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারব এবং দেশের জন্য ভালো কিছু উপহার দিতে পারব। এ একাডেমি থেকে অনেক খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্বে দিচ্ছে। সেদিক থেকে অবশ্যই এমন একটি একাডেমিতে ন্যাশনাল ক্যাম্পে আসতে পারাটাও অনেক ভাগ্যের ব্যাপার।”

কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘‘সবসময় ক্যাম্প ঢাকাতে হয়। সেখানে নানা প্রতিবন্ধিকতা থাকে। মাঠে যাতায়াত, মাঠ সংকট থাকে। এখানে পর্যপ্ত মাঠ রয়েছে। একই সাথে নিরিবিলি ট্রেনিং করতে পারব। ফোকাসটা ট্রেনিংয়ে থাকতে পারবে। প্রথম দিনে খেলোয়াড়দের চাঞ্চল্যতায় মানসিকভাবে ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে। এ ধরনের ক্যাম্প আগামি সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে ভূমিকা রাখবে।’’

ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ শফিকুউজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন। 

এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির পরিচালক শেখ শামস্-উল-বারী শিমুল ও অনুষ্ঠানের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমির উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান।

একাডেমির পরিচালক শেখ শামস্-উল-বারী শিমুল বলেন, ‘‘গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে ৩৮ সদস্যের জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দল সদর উপজেলার হামিদপুরস্থ শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমিতে পৌঁছায়। তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন একাডেমির শিক্ষার্থীরা। আর ৩৮ সদস্যের জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলে মধ্যে ৩১জন খেলোয়াড় ৫ জন অফিসিয়াল ও দুইজন বল বয় রয়েছেন। চার জন খেলোয়াড় যোগ দেবে আগামিকাল শুক্রবার। সবমিলিয়ে ৩৫ জন ক্যাম্পে অংশ নেবে। টিমের জন্য তিনটি মাঠ প্রস্তুত আছে।” 

তিনি আরো বলেন, “ঢাকার বাইরে এ প্রথম যশোর শামস্-উল-হুদা ফুটবল একাডেমিতে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দলে’র দুই সপ্তাহব্যাপী প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু হয়েছে। এর আগে ঢাকা বাইরে জাতীয় দলের কোনো আবাসিক ক্যাম্প হয়নি।’’

ঢাকা/রিটন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল এক ড ম র এক ড ম ত প রস ত ত উল হ দ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ