দোকানে চুরি, দেরিতে আসায় পুলিশের মাথা ফাটালেন মুদি দোকানি
Published: 18th, April 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে দোকানে চুরির ঘটনার পর ঘটনাস্থল পৌঁছাতে দেরি করায় ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন এক মুদি দোকানি। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশের আরেকটি দল ঘটনাস্থল পৌঁছে আহত ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনার পর সকালেই অভিযুক্ত মুদি দোকানিকে আটক করা হয়েছে।
আহত আবুল হোসেন (৩৫) পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। তিনি শ্রীপুর থানার মাওনা পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত। অভিযুক্ত মুদি দোকানির নাম মো.
শৈলাট বাজারে তাঁর মুদি দোকান রয়েছে। এ ঘটনায় এএসআই আবুল হোসেন বাদী হয়ে আজ দুপুরে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ জানান, আজ সকাল পৌনে ৭টার দিকে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাকে একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে সমস্যা জেনে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ফোন করলে রাতে দোকানে চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী রাশেদ।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের এএসআই আবুল হোসেনসহ পুলিশের দুই সদস্যকে পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশের ওই দলটি সেখানে পৌঁছার পর দেরির কারণ জানতে চান রাশেদ। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে ওই ব্যবসায়ী লোহার শিকল দিয়ে আবুল হোসেনের মাথায় আঘাত করেন। এতে আবুল হোসেনের মাথা ফেটে যায়।
খবর পেয়ে মাওনা ফাঁড়ি থেকে পুলিশের আরেকটি দল সেখানে পৌঁছে রক্তাক্ত অবস্থায় এএসআই আবুল হোসেনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘ওই মুদি ব্যবসায়ী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯-এ ফোন করে দোকানে চুরির অভিযোগ করেছিলেন। তবে পুলিশ সেখানে গিয়ে তদন্ত করে চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানতে পারে। ওই সময় মুদি ব্যবসায়ী দেরি করে পুলিশকে ঘটনাস্থল পৌঁছার কারণ জানতে চান, এক পর্যায়ে হামলা চালান। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী রাশেদকে আসামি করে মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব যবস য় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হচ্ছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে
জালিয়াতির মাধ্যমে এলসির বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পাঁচটি মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানও আসামি হতে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় মামলাগুলোর অনুমোদন দেয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমানের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, ভাই, ভাতিজা, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অনুমোদিত পাঁচ মামলায় ৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় সালমান এফ রহমান ছাড়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছেলে শায়ান এফ রহমান, ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী, পরিচালক এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক ও রীম এইচ শামসুদ্দোহা।
এ ছাড়া স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন ও পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক নুসরাত হায়দার, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি ওয়াসীউর রহমান ও পরিচালক রিজিয়া আক্তার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আবদুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দী সম্ভাব্য আসামির তালিকায় রয়েছেন।
জনতা ব্যাংকের মধ্য থেকে আসামি করা হচ্ছে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ ও আবদুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক আবদুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক শহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম (রপ্তানি বিভাগ) মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত এজিএম মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) মোহাম্মদ শাজাহান, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) হুমায়ুন কবির ঢালী ও প্রিন্সিপাল অফিসার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশাকে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের যোগসাজশে জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়। এর মধ্যে পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯১ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৫ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলার আত্মসাৎ হয়।
সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।
সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।