পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে ইরান খুব বেশি দূরে নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। তেহরানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে এ মন্তব্য করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে, পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা করছে ইরান। যদিও তেহরান কখনোই তাদের অভিযোগ স্বীকার করেনি। তেহরানের দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোটাই বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া ইরান বিপজ্জনকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

গালফ টাইমসের খবরে বলা হয়, বুধবার ফরাসি পত্রিকা লে মন্ডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, এ বিষয়টি ধাঁধার মতো। তাদের কাছে খণ্ড খণ্ড (পারমাণবিক) শক্তি আছে, একদিন তারা এগুলো একত্রিত করতে পারবে। ইরানের ওই পর্যায়ে পৌঁছাতে এখনও বহু পথ বাকি থাকলেও সময়টা খুব বেশি দূরে নয়, যা আমাদের স্বীকার করতেই হবে।

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতার বিষয়টি যাচাই করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শুধু এটা বললেই হবে না যে, আমাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই, যার ভিত্তিতে তারা আপনাকে বিশ্বাস করবে। এ ক্ষেত্রে বিষয়টি আমাদের যাচাই করতে দিতে হবে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনা আটকে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পরিবর্তে তিনি একটি চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কার্যক্রম সীমিত করার চেষ্টা করছেন। মার্কিন প্রশাসনসহ অন্যদের বরাত দিয়ে বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। 

রয়টার্স জানায়, ইরানের তেল রপ্তানিকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে একটি চীনা ‘টিপট’ তেল পরিশোধনাগারও রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তেহরানের ওপর চাপ বাড়াতে আবারও তার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি চালু করেছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ