রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেছেন, সংস্কারের বিরুদ্ধে একটি দল রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, শুধু তাদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য আবু সাঈদ-মুগ্ধরা জীবন দেননি। গণ-অভ্যুত্থানের মৌলিক আকাঙ্ক্ষা ছিল রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার।

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত সমাবেশে এ কথাগুলো বলেন হাসনাত কাইয়ুম।

১৭ এপ্রিল প্রবাসী সরকারের শপথ গ্রহণ দিবস স্মরণে এবং শিল্প ক্ষেত্রে গ্যাস ও ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, পাচার-লুণ্ঠনকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, সংবিধান সংস্কার সভা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার দাবিতে এই সমাবেশ করা হয়।

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে, গণ-অভ্যুত্থানের পর মানুষ নতুন রাজনীতির কথা বলছেন। এর অর্থ হলো, আন্দোলনে যাঁরা রাস্তায় ছিলেন, তাঁদের নিয়ে নতুন বন্দোবস্ত ঠিক করা। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হলে এই সরকারও পার পাবে না।

রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন হাসনাত কাইয়ুম। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলে, ‘হঠাৎ করে ভোজ্যতেল ও শিল্প ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো। অবিলম্বে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করুন। আর শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কেন আমাদের দেশে আসবেন? নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি তাঁদের নিরুৎসাহিত করবে।’

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, গত ১৫ বছরে দেশ থেকে যেসব টাকা লুট হয়েছে, বিদেশে পাচার হয়েছে, এদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। বিপরীতে অর্থ পাচারকারীরা নতুন পত্রিকা, টেলিভিশনের মালিক হচ্ছেন। তাঁরা নতুন করে পুনর্বাসিত হচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি সরকার। এই পরিবর্তন না হলে মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন নিশ্চিত হবে না।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল শপথ নেওয়া প্রবাসী সরকার সবচেয়ে সফল ছিল বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির অর্থবিষয়ক সমন্বয়ক দিদার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, প্রবাসী সরকারের চেয়েও বেশি সফল হওয়ার সুযোগ ছিল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের। কিন্তু তারা সেই সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পেরেছে, সেটা বিবেচনা করতে হবে। হাতে গোনা কিছু সফলতা ছাড়া তাদের তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি প্রান্তিক কৃষকদের বঞ্চিত করছে বলে মন্তব্য করেন দিদার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, সব পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারীর হাতে থাকলেও কৃষিপণ্যের দাম মধ্যস্বত্বভোগীরা নির্ধারণ করেন। অন্য দ্রব্যের দাম লাগামহীন, অথচ কৃষিপণ্যের দাম কম। এই সরকার কৃষকের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে। তাঁরা সরকারকে প্রান্তিক মানুষকে ভালো রাখার পথ উন্মুক্ত করতে বলছেন, তা না হলে এই সরকার ব্যর্থ সরকারে পরিণত হবে।

সমাবেশ সঞ্চালনায় ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সমন্বয়ক সোহেল শিকদার। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য জাকিয়া শিশির, কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, রাষ্ট্র চিন্তার সদস্য সেলিম খান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

কনসার্টের জন্য কত পারিশ্রমিক নেন অরিজিৎ

তাঁর সংগীতের সফর শুরু হয়েছিল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থেকে। আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে অরিজিৎ সিং ভারতের অন্যতম আলোচিত শিল্পী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কনসার্টে গাওয়ার জন্য বেশি পারিশ্রমিক নেন। আসলে কত পারিশ্রমিক নেন গায়ক?

সম্প্রতি সুরকার মন্টি শর্মা পিংকভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অরিজিতের পারিশ্রমিক নিয়ে। তিনি বলেন, ‘একটা সময় পরে অনেক কিছুর বিবর্তন হয়েছে। আগে গোটা একটা গান আমরা দুই লাখ রুপিতে শেষ করতাম। এর মধ্যে গোটা অর্কেস্ট্রা, ৪০ জন বেহালা বাদক, আরও অনেক কিছু থাকত। তারপর ধীরে ধীরে গানপ্রতি নিজের জন্য ৩৫ হাজার রুপি নিতে থাকলাম।’

এরপরই অরিজিতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মন্টি বলেন, ‘অরিজিৎ যখন আসত, তখন টানা ছয় ঘণ্টা আমার সঙ্গে একটা গান নিয়ে বসত। এখন ও একটি অনুষ্ঠানের জন্য দুই কোটি রুপি নেয়। তাই ওকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে হলে দুই কোটিই দিতে হবে। আগে তো মানুষ বেতারে ও টিভিতেও গান শুনত। কিন্তু এখন তাদের কাছে ইউটিউব আছে। এখন গান শোনার মাধ্যম অনেক বড়। তাই অর্থের পরিমাণও এখন বেড়েছে। তাই এখন যদি ১৫-২০ লাখ টাকা দিয়ে একটা গান করি, তা হলে ৯০ শতাংশ স্বত্ব কিনে নেয় অডিও সংস্থা। এই অডিও সংস্থাগুলো এখন আয় করছে।’

আরও পড়ুনযার গানে মুগ্ধ অরিজিৎ সিং, কে এই এনজেল নূর? ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ