বন্দরে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে সমাবেশ
Published: 18th, April 2025 GMT
আগামী রাষ্ট্র নায়ক তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন লক্ষে বন্দরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলের আয়োজনে বন্দর উপজেলার চর ইসলামপুর এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, জনগনের গনতন্ত্র অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই তারেক রহমানের মূল লক্ষ।
আমরা বিএনপি করি শহীদ জিয়ার আর্দশকে বুকে ধারন করে। শহীদ জিয়া এদেশে কৃষি বিল্পব ঘটিয়ে ছিলেন। রাষ্ট্র কাঠামো উন্নয়নে আমার নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা বাস্তবায়নে কোন বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি মধ্যে একাধিক গ্রুপিং রয়েছে। আমি নেতাকর্মীদের আহবান জানাব আপনারা দলের মধ্যে বিভক্তি তৈরি না করে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করুন।
১৬ বছরে ফ্যেসিস্ট সরকার এদেশের অর্থনিতিকে ধ্বংশ করে দিয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে এ ধ্বংশাত্মক দেশকে উন্নয়নশিল রাষ্ট্রে পরিনত করতে হবে। সে সাথে
বন্দর উপজেলা বিএনপিকে শক্তিশালী করতে হলে আমাদের নেতা আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুলের বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার করার জন্য তারেক রহমানসহ কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান মিজানের সভাপতিত্বে ৩১ দফা বাস্তবায়ন লক্ষে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বন্দর থানা বিএনপি নেতা মেজবা উদ্দিন স্বপন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান খোকন, একই কমিটির সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ মোসলে উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, নাসিক ২৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ হানিফ, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সাফি, আব্দুর রাজ্জাক, ২৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হাজী ফখরউদ্দিন ডালিম ও আক্তার হোসেন, ২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক এসাক আজাদ, সাংগঠনিক আব্দুল জাব্বার পাঠান, ২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা নাদিম মাহামুদ, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রুহুল আমিন, মুছাপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো: জাহাঙ্গীর আলম, মুছাপুর ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মিছির আলী, বন্দর ইউনয়ন ৯নং ওযার্ড বিএনপি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দোস্তগীর হোসেন পাভেল,মুছাপুর ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা জামান প্রধান, ২৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হিরন বাদশা, টাইগার রশিদ ও সালামসহ মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও যুবদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন র ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।