সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর রাতে ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে ডেকে নিয়ে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের র‍্যাগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

কৃষি বিভাগের ১৬তম ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে একই বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ভুক্তভোগীরা শিক্ষার্থী অভিযোগ এনেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টা থেকে আড়াটা পর্যন্ত সিকৃবির পাশের টিলাগড় ইকোপার্ক রোডের আমিরের টঙ-সংলগ্ন সেতুর ওপর কৃষি বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। 

আরো পড়ুন:

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সারা দেশে ‘কাফন মিছিল’

কারিগরি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের সমর্থন ‘ঘৃণাভরে’ প্রত্যাখ্যান

১৬তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থীর নির্দেশে ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফকে দিয়ে ব্যাচের সব ছেলেকে আমিরের টঙে রাত ১২টার পর আসতে বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে তাদের তিন-চারজন করে বের হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ১৭তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, "আমাদের ছেলেদের গ্রুপে আরিফ মেসেজ দিয়ে বলে রাত ১২টার পর ভাইদের সঙ্গে দেখা করতে হবে সবাইকে এবং অবশ্যই থাকতে হবে।”

“আমরা ১৭ জন আমিরের টঙ-সংলগ্ন ব্রিজে পৌঁছাতেই আমাদের মোবাইল ১৬তম ব্যাচের ভাইরা জব্দ করে এবং কারো কারো ফোন বন্ধ করে দেন। সেখানে সিনিয়রদের সালাম দেওয়া নিয়ে অনেক অশ্লীল কথা বলেন তারা। কয়েকজনকে এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন, একজনকে ব্যাঙের মতো অঙ্গভঙ্গি করতে বলেন।”

“উচ্চস্বরে চেঁচামেচির জন্য আমাদের মধ্যে অনেকে ভয়ে কাঁপতেছিল। পাশের বসবাসরত এলাকার অনেকেই লাঠি নিয়ে এসেছিল মারামারি ভেবে। তবে ভার্সিটির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তারা চলে যায়।”

তিনি আরো বলেন, “ভার্সিটির বড় আপুদের নিয়েও অনেক অশ্লীল কথা বলে আমাদের। ক্লাসে এসে আমাদের সবাইকে কাঁদাবে বলেও হুমকি দেন তারা। আমাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন তারা।”

এই নির্যাতনের যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে নতুন করে র‌্যাগিংয়ের শিকার হওয়ার ভয় থেকে তারা কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি। তবে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, র‌্যাগিংয়ের সময় ১৬তম ব্যাচের প্রায় ২০ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের তথ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে রয়েছেন, ১৬তম ব্যাচের তানজিম রহমান, সায়েম, নুরুল ইসলাম, রুশাদ, নাফিস ইকবাল, ফুয়াদ তাসনিম, রাকিবুল হাসান, দুর্জয় হাসান, দুর্জয় সরকার, মুস্তাকিম স্বাধীন, মাহবুব নায়েম, মুসা বিন ফয়সাল, ফাহিম, মাহমুদুর হাদী, সামিউল ইফাত তানজিম, মঈন উদ্দিন, শাহরিয়ার ইসলাম।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সিকৃবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার বলেন, "এই ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত নই। বিশ্ববিদ্যালয়ে  র‍্যাগিং, বুলিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে যারা এমন কাজ করছেন, সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এখানে কোনো পলিটিকাল সংশ্লিষ্টতা থাকলেও ছাড় দেওয়া হবে না।"

ঢাকা/আইনুল/রাসেল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৭তম ব য চ র ১৬তম ব য চ র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল কিশোরী, সাপের কামড়ে মৃত্যু

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সাপের কামড়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীকে একটি বিষধর সাপ ছোবল দেয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার।

নিহত কিশোরীর নাম নাঈমা আকতার (১৩)। সে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামের বক্সি মিয়াজিবাড়ির মোহাম্মদ হাসানের মেয়ে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল নাঈমা। রাত তিনটার দিকে সাপের ছোবলে তার ঘুম ভাঙে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালে তাকে উদ্ধার করে রাতেই আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানতে চাইলে নাঈমার চাচা কফিল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘সাপে কামড় দিয়েছে জানার পর আমরা নাঈমাকে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।’

আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাপে কামড় দেওয়া এক কিশোরীকে হাসপাতালে আনা হয়ছিল। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ