কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন সম্মেলনে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে সামনের সারিতে বসতে দেখা গেছে। শুক্রবার বিকেল থেকে এই ছবি ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার দুপুরে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রথম সারিতে বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে দেখা যায়। এই ঘটনায় স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীরা ক্ষোভ  প্রকাশ করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, কুমিল্লা-১০ আসনে জামায়াতের এমপি প্রার্থী মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত, জেলা জামায়াতের অফিস সম্পাদক গোলাম সরওয়ার মজুমদার কামাল, লালমাই উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুর নূর ও সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসাইন।

ওই সম্মেলনে উপস্থিত জামায়াতের নেতাকর্মী জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আ হ ম মুস্তফা কামালের নিজ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ওই নেতা গত বছরের ৫ আগষ্টের পর কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তীতে এলাকায় ফিরে জামায়াতের ব্যানারে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ শুরু করেন।

একাধিক জামায়াত নেতাকর্মী বলেন, ‌'আওয়ামী লীগের সময়ে যেসব আওয়ামী লীগ নেতা জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছেন, মামলা দিয়েছেন, সরকার পতনের পর সেসব আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এখন দল বদলে জামায়াতে আসার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি দুঃখজনক।' 

এদিকে জামায়াতের সম্মেলনে উপস্থিত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'আমি আওয়ামী লীগের পদে আছি এটা সত্য, আমি পদত্যাগ করিনি তাও সত্য। তবে মুসলমান হিসেবে বিভিন্ন ইসলামিক প্রোগ্রামে থাকা লাগে। এটা দোষের কিছু দেখছি না।'

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসাইন বলেন, 'জামায়াতের ইউনিয়ন সম্মেলনে অন্য দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকার সুযোগ নেই। বিষয়টি খেয়াল করিনি। খোঁজ নিয়ে দলীয় ফোরামে বিষয়টি আলোচনা করা হবে।'

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম আওয় ম ল গ ন ত ন ত কর ম আওয় ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।

হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ