সচেতন জনগণ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প দল খুঁজছে। বিগত সরকারের আমলে ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য কিছুটা এগিয়ে জনগণের মনে আশার সঞ্চার করলেও আওয়ামী লীগের কারণে তা ভেস্তে যায়। এর পর কোনো দলকে ফ্যাসিস্ট সরকার বিকল্প গড়তে দেয়নি। চব্বিশের আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্রদের নতুন দল নিয়ে আবার জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আশার দিক হচ্ছে, ছাত্রদের দল জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে জনবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে যাবে এবং এক সময় ক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। যেখানে থাকবে না বসবাসে আকাশসম বৈষম্য; থাকবে না কথা বলার ভয়। সংখ্যালঘুরা নিজেদের দেশ নিয়ে গর্ব করবে। থাকবে নারী স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার।
স্বাধীনতার পর থেকে আমরা দেখে আসছি আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে দেশ-বিদেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। অথচ সংখ্যালঘুরা তাদের দ্বারাই বেশি নির্যাতিত হয়েছে বলে আমরা জানি। তাই নতুন দল ‘এনসিপি’কে প্রকৃত অর্থেই একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। ভুললে চলবে না– একাত্তর আমাদের শিকড়। গাছ যেমন শিকড় বিনা বাঁচতে পারে না, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের গৌরব ও আকাঙ্ক্ষা ধারণ ব্যতীত কোনো দল সামনে এগোতে পারবে না। তাই প্রত্যাশা, এনসিপি মধ্য বাম দল হিসেবে গড়ে উঠবে এবং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’-এর পরিবর্তে উচ্চারিত হবে ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’। গতানুগতিক বা মধ্যপন্থি দল বিএনপি তো রয়েছে, যাকে একই পন্থায় এনসিপি অতিক্রম করতে পারবে না। অন্যদিকে এনসিপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ২৯টিতে ভিন্নমত পোষণ করলেও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ মতবাদ বাদ দেওয়া এবং ‘বহুত্ববাদ’ গ্রহণে ঐকমত্য পোষণ করেছে। কিন্তু ‘বহুত্ববাদ’ একটি অস্পষ্ট ধারণা, যা দ্বারা অনির্দিষ্ট অনেক কিছুকে বোঝায়। আবার যেখানে সংবিধানে রাষ্ট্রের নিজস্ব ধর্ম রয়েছে, সেখানে বহুত্ববাদের গুরুত্ব আর থাকে না। এনসিপিকে দ্রুত এগোতে হলে প্রকৃতই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, যেন দলনিরপেক্ষ উদারমনা জনতা ও সংখ্যালঘুরা এর নিচে আশ্রয় নিতে পারে। এনসিপির মূল বা শিকড় হতে হবে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া সব নেতার অবদানের মূল্যায়ন এবং স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করা।
এ সরকারের মন্দ কাজের জোরালো সমালোচনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে– সরকারঘেঁষা কোনো দল সহজে জনপ্রিয় হয় না। ‘এনসিপি’কে বুঝতে হবে আধুনিক দুনিয়ায় কোনো চরম পন্থার স্থান নেই এবং যারা
চরম ডান বা চরম বামের রাজনীতি করছেন, তাদেরকেও ভবিষ্যতে সাচ্চা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। আশা করি, এনসিপির গঠনতন্ত্রে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ধারা দেখতে পাব।
নুরুল আমিন: নিবন্ধকার, ঢাকা
cuzamanctg@gmail
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প স ব ধ নত র এনস প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপগঞ্জে লিফলেট বিতরণ
আওয়ামীলীগ দেশের মানুষের অধিকার হনন করেছে। তাই, দেশে এক গণবিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছে। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ এ দেশ থেকে বিতারিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও রূপগঞ্জ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ দুলাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার এলাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণকালে মোহাম্মদ দুলাল হোসেন এসব কথা বলেন।
লিফলেট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ, বিএনপি-যুবদলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মোহাম্মদ দুলাল হোসেন আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একদলীয় শাসন ও ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে জিম্মি হয়ে ছিল। মানুষের বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের গণজাগরণের মধ্য দিয়ে জনগণ আবারও তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। এখন সময় এসেছে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার।”
তিনি আরও বলেন, “তারেক রহমানের ৩১ দফা দেশের পুনর্গঠনের পথনির্দেশনা। এই দফাগুলোতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
এসময় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দও লিফলেট বিতরণে অংশগ্রহণ করেন। তারা সাধারণ মানুষকে বিএনপির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে, দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত এবং জনগণের পাশে থাকবে।
স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছেন তারা। এ ধরনের লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে জনগণ আরও বেশি সচেতন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি বছরের শুরুতে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়।