Samakal:
2025-04-30@23:41:35 GMT

এনসিপির কাছে প্রত্যাশা

Published: 18th, April 2025 GMT

এনসিপির কাছে প্রত্যাশা

সচেতন জনগণ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প দল খুঁজছে। বিগত সরকারের আমলে ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য কিছুটা এগিয়ে জনগণের মনে আশার সঞ্চার করলেও আওয়ামী লীগের কারণে তা ভেস্তে যায়। এর পর কোনো দলকে ফ্যাসিস্ট সরকার বিকল্প গড়তে দেয়নি। চব্বিশের আন্দোলনে বিজয়ী ছাত্রদের নতুন দল নিয়ে আবার জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আশার দিক হচ্ছে, ছাত্রদের দল জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে জনবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে যাবে এবং এক সময় ক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। যেখানে থাকবে না বসবাসে আকাশসম বৈষম্য; থাকবে না কথা বলার ভয়। সংখ্যালঘুরা নিজেদের দেশ নিয়ে গর্ব করবে। থাকবে নারী স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার। 
স্বাধীনতার পর থেকে আমরা দেখে আসছি আওয়ামী লীগ একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে দেশ-বিদেশে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। অথচ সংখ্যালঘুরা তাদের দ্বারাই বেশি নির্যাতিত হয়েছে বলে আমরা জানি। তাই নতুন দল ‘এনসিপি’কে প্রকৃত অর্থেই একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। ভুললে চলবে না– একাত্তর আমাদের শিকড়। গাছ যেমন শিকড় বিনা বাঁচতে পারে না, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের গৌরব ও আকাঙ্ক্ষা ধারণ ব্যতীত কোনো দল সামনে এগোতে পারবে না। তাই প্রত্যাশা, এনসিপি মধ্য বাম দল হিসেবে গড়ে উঠবে এবং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’-এর পরিবর্তে উচ্চারিত হবে ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’। গতানুগতিক বা মধ্যপন্থি দল বিএনপি তো রয়েছে, যাকে একই পন্থায় এনসিপি অতিক্রম করতে পারবে না। অন্যদিকে এনসিপি সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ২৯টিতে ভিন্নমত পোষণ করলেও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ মতবাদ বাদ দেওয়া এবং ‘বহুত্ববাদ’ গ্রহণে ঐকমত্য পোষণ করেছে। কিন্তু ‘বহুত্ববাদ’ একটি অস্পষ্ট ধারণা, যা দ্বারা অনির্দিষ্ট অনেক কিছুকে বোঝায়। আবার যেখানে সংবিধানে রাষ্ট্রের নিজস্ব ধর্ম রয়েছে, সেখানে বহুত্ববাদের গুরুত্ব আর থাকে না। এনসিপিকে দ্রুত এগোতে হলে প্রকৃতই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে, যেন দলনিরপেক্ষ উদারমনা জনতা ও সংখ্যালঘুরা এর নিচে আশ্রয় নিতে পারে। এনসিপির মূল বা শিকড় হতে হবে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া সব নেতার অবদানের মূল্যায়ন এবং স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করা। 
এ সরকারের মন্দ কাজের জোরালো সমালোচনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে– সরকারঘেঁষা কোনো দল সহজে জনপ্রিয় হয় না। ‘এনসিপি’কে বুঝতে হবে আধুনিক দুনিয়ায় কোনো চরম পন্থার স্থান নেই এবং যারা 
চরম ডান বা চরম বামের রাজনীতি করছেন, তাদেরকেও ভবিষ্যতে সাচ্চা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার  রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। আশা করি, এনসিপির গঠনতন্ত্রে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ধারা দেখতে পাব।

নুরুল আমিন: নিবন্ধকার, ঢাকা
cuzamanctg@gmail

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প স ব ধ নত র এনস প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: