চাষির ঘরে পেঁয়াজ শেষ হতেই দাম বেড়ে দ্বিগুণ
Published: 19th, April 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাষির ঘরে পেঁয়াজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খুচরা বাজারে এর দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই আড়তদাররা পেঁয়াজ মজুদ করে এখন ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি মৌসুম শেষে বছরের বাকি সময়ে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ‘মডেল ঘর’ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন চাষিরা।
পেঁয়াজচাষিদের অভিযোগ, বাজার তদারকিতে গাফিলতি থাকায় ব্যবসায়ী ছাড়াও অনেকেই পাইকারি দামে পেঁয়াজ কিনে অবৈধভাবে মজুদ করেছেন। এখন কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়ানো হচ্ছে দাম।
এদিকে, আকস্মিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
চাঁপাইনবাবঞ্জে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কায় তড়িঘড়ি করে চাষিরা পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন। সাপ্তাহিক হাট ও কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে পেঁয়াজ কিনেছেন আড়তদাররা। এখন চাষিদের ঘরে পেঁয়াজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আড়তদাররা দাম বাড়িয়েছেন।
সরেজমিনে জেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে রকমভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। বর্তমানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে রকমভেদে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
চাষিরা জানিয়েছেন, বাম্পার ফলন হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে যায় পেঁয়াজের। কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় দ্রুত বাজারজাত করেন তারা। তড়িঘড়ি করে পেঁয়াজ বিক্রি করায় খরচ উঠলেও আশানুরূপ লাভের মুখ দেখেননি চাষিরা। বর্তমানে খুচরা বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বেচাকেনা দেখে হতাশ তারা।
শিবগঞ্জ উপজেলার পেঁয়াজচাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু আশানুরূপ দাম পাওয়া যায়নি। বাজারে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ সরবরাহ থাকার কারণেই এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এবার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেকেই পেঁয়াজ মজুদ করেছেন। এখন মজুদদাররা ইচ্ছে করেই বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন।
নাচোল উপজেলার চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, চাষির হাত খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৌসুম শেষ না হতেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। সিন্ডিকেট করে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তাই, পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য মডেল ঘর নির্মাণ করা প্রয়োজন। এতে চাষিরা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন। ফলে, সারা বছরই বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো.
চাষিদের পেঁয়াজ সংরক্ষণে মডেল ঘর নির্মাণের দাবির বিষয়ে কৃষি বিপণন কর্মকর্তা বলেন, পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণে ইতোমধ্যে মডেল ঘর নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। ওই প্রকল্পে এ জেলার নাম না থাকায় মডেল ঘর নির্মিত হয়নি। এখানে মডেল ঘর নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কয়েক জায়গায় আলোচনা করেছি। সরকার চাইলে এখানে মডেল ঘর নির্মাণ করা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অনেক পরিমাণে রসুন, পেঁয়াজ চাষ হয়। সেজন্য মডেল ঘর নির্মাণ করা খুব প্রয়োজন।
ঢাকা/শিয়াম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ বগঞ জ হওয় র প ইনব
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।