বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ে না বলিউড অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলার। কিছুদিন আগে নিজের সৌন্দর্যের বর্ণনা করতে গিয়ে নেটিজেনদের ট্রোলের শিকার হন। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও বিতর্কে জড়ালেন তিনি।
উর্বশী উত্তরাখণ্ডের মেয়ে। তাঁর দাবি, উত্তরাখণ্ডের মেয়ে বলেই তিনি সবদিক থেকে সুন্দরী। উর্বশীর এই মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তে। যেখানে দেখা যায়, উর্বশী বলেছেন, ‘উত্তরাখণ্ডের মানুষ এমনিতেই লম্বা, ফর্সা ও সুন্দর। আপনি আমার যা দেখছেন সবটাই স্বাভাবিক। এর মধ্যে কৃত্রিম কিছু নেই। আমি তো উত্তরাখণ্ডের মানুষ। জন্মের পর থেকেই এখানকার মানুষ সুন্দর। তাই কৃত্রিমভাবে কোনো কিছু দরকার পড়ে না।’
এরপর নিজের বাবার সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাবাকেই দেখুন। তাঁর উচ্চতা ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি। ফর্সা, সুন্দর ও লম্বা। একেবারে সুপারমডেলের মতো।’উর্বশীর এই ভিডিও দেখে একজন মন্তব্য করেছেন– ‘আপনি সব সময় নিজেকে নিয়ে এত বড়াই করেন কীভাবে!’ অন্য আরেকজন লিখেছেন– ‘আপনি নিজের জন্য একটি লোক নিয়োগ করুন, যিনি আপনার এসব নিরর্থক কথা মন দিয়ে শুনবেন।’
সম্প্রতি তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক বিস্ময়কর দাবি করে বলেন, ‘উত্তরে আমার নামে মন্দির আছে, এবার দক্ষিণেও চাই!’ উর্বশী দাবি করেন, বদ্রিনাথ মন্দিরের পাশেই নাকি রয়েছে তাঁর নামাঙ্কিত ‘উর্বশী মন্দির’! অভিনেত্রীর এই কথার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতেই হতবাক সবাই!
তার এ মন্তব্যকে অনেকেই ইয়ার্কি ভেবে উড়িতে দিতে চাইলেও নেটিজেনদের একাংশ এতে ক্ষেপেছেন। কারণ, ভিডিওতে অভিনেত্রীকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি একেবারেই সিরিয়াস। ওখানে আমার নামে মন্দির রয়েছে। ভক্তরা প্রণাম করতে আসেন।’
এরপর তিনি আবদারের ছলে বলেন, ‘এবার দক্ষিণেও আমার নামে মন্দির চাই। ওখানে অনেক ছবিতে কাজ করেছি।’ অভিনেত্রীর এমন দাবি শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন উত্তর ভারতের পুরোহিতরা।
বদ্রিনাথ মন্দিরের সাবেক পুরোহিত ভুবনচন্দ্র উনিয়াল এই অভিনেত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বদ্রিনাথ-সংলগ্ন উর্বশী মন্দির সতীর ১০৮ শক্তিপীঠের অন্যতম। দেবী উর্বশী সতীর এক বিশেষ রূপ। তাঁর দাবি, অভিনেত্রীর এ ধরনের মন্তব্য একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। সরকারের উচিত তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।
পুরোহিত ভুবনচন্দ্র উনিয়ালের কথার সূত্র ধরেই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বদ্রিনাথ-সংলগ্ন বামনি ও পাণ্ডুকেশ্বর এলাকার পুরোহিতরাও।
এই দুই ঘটনার কিছুদিন আগে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের সঙ্গে নিজের তুলনা করেও কটাক্ষের মুখে পড়েন তিনি। বলতে গেলে প্রতিনিয়ত যেন বিতর্ককে সঙ্গী করেই চলছে পছন্দ করেন এ অভিনেত্রী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র ব তর ক মন দ র স ন দর
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত