দিনাজপুরে হিন্দু নেতার মৃত্যু, মামলা হয়নি তিন দিনেও
Published: 19th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরল উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহসভাপতি ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুর তিন দিনেও মামলা হয়নি। তাঁর মৃত্যুর ঘটনাটি অনেকেই রহস্যজনক মনে করলেও পরিবার জানিয়েছে ভিন্ন কথা। এদিকে এ ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘সংখ্যালঘু’ বা ‘হিন্দু হত্যা’ উল্লেখ করে প্রচারিত সংবাদের বিষয়ে পরিবার কিছু বলতে চায়নি।
ভবেশ চন্দ্র বিরল উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত তারকানন্দ রায়ের ছেলে। পরিবার জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মোটরসাইকেলে চারজন এসে তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। তবে এ সময় ভবেশকে জোর জবরদস্তি করা হয়নি। নিজের ইচ্ছাতেই তিনি মোটরসাইকেলে উঠে চলে যান। রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে পরিবারকে জানানো হয়, ‘পান-বিড়ি খাওয়ার পর ভবেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে ভ্যানে বাড়ির পাশের ফুলবাড়ী হাটে পাঠানো হয়েছে।’ পরে পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে ভবেশকে অচেতন অবস্থায় পান।
ভবেশকে যখন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন গ্রাম্য চিকিৎসক কৃষ্ণ কান্ত তাঁর রক্তচাপ মাপেন। তিনি জানান, অসুস্থতার সময় ভবেশের চোখ-মুখ বন্ধ ছিল। রক্তচাপ ছিল ওপরে ৭০ এবং নিচে নীল। পরে কৃষ্ণ কান্তের পরামর্শে তাঁকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ভবেশের মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলতে নারাজ পরিবার। রোববার তাঁর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান। এর পর মৃত্যুর ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ কিংবা অপমৃত্যু মামলা করার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে পরিবার। ভবেশের ছেলে স্বপন বলেন, ‘বাবার মৃত্যু অস্বাভাবিক। তবে অসুস্থ হয়ে, নাকি আঘাতের মাধ্যমে তিনি মারা গেছেন, সেটি এখনও নিশ্চিত না।’
ভবেশের স্ত্রী সান্ত্বনা রানী জানান, সেদিন রতন, আতিকসহ চারজন তাঁর স্বামীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে যান। ভবেশ কীভাবে মারা গেছেন, তা এখনও সঠিকভাবে বলতে পারছেন না সান্ত্বনা।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুবল চন্দ্র রায় জানান, ভবেশ এই পরিষদের সহসভাপতি। তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
শনিবার রাতে বিরল থানার ওসি আব্দুস সবুর জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ঘটনার রাতেই নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন করেছে পুলিশ। লাশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এর পর পুলিশ নিজ উদ্যোগে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে পাঠায়। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফাত হুসাইন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিবেশী রতন, আখতারুল ইসলাম, রুবেল ইসলা ও মুন্নার সঙ্গে দুটি মোটরসাইকেলে করে ভবেশ নাড়াবাড়ি হাটে যায়। তাদের মধ্যে বয়সের পার্থক্য থাকলেও তারা নিয়মিত একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। তারা মাঝেমধ্যে একসঙ্গে মাদকসেবন করতেন। মাদকের কারণে ভিকটিম ভবেশের অনেক সম্পত্তি খোয়া গেছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাজারে চা ও ধূমপান করার পর মাথা ঘুরে বসে পড়েন ভবেশ। খয়ের, চুন ও কাঁচা সুপারি দিয়ে পান খেয়েছিল। এ সময় দোকানের একটি খুঁটিতে হেলান দিয়ে বসে পড়েন। সেখান বসাই ধরাধরি করে পল্লি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এই মৃত্যুর ঘটনায় কেউ কোনো মামলা করতে আসেনি, অভিযোগও দেয়নি। ময়নাতদন্ত হয়েছে, প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। কিছু পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। স্থানীয় সময় রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর জবাবে রবিবার রাতে ইসরায়েলে অন্তত ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ’র বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূপাতিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সঙ্গে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা।
আরো পড়ুন:
ইরানে আবারো হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের শক্তি অনুভব করবে ইরান: নেতানিয়াহু
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইতিমধ্যে দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে সরাসরি আঘাত হেনেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিও জানিয়েছে, হাইফাতে এবং তেল আবিবে সরাসরি আঘাত হেনেছে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র।
ইসরায়েলি ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসও জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা। তাদের উদ্ধারকারীরা এখন ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, লাচিশ এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে চারজন আহত হয়েছেন। এখন হতাহতের সংখ্যা নিরূপণ করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দেশটির আকাশসীমা ও বিমানবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ