গাজীপুরে তুসুকার শ্রমিকরা দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ ও কর্মবিরতিতে
Published: 20th, April 2025 GMT
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে তুসুকা গ্রুপের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে দুইদিন ধরে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছেন। সবগুলো দাবি পূরণ না হলে এই বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি লাগাতার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৮ টা থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি শুরু করে কারখানার ভেতরেই বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। কারখানার বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এরআগে তারা গতকাল শনিবার সকালে কর্মবিরতি শুরু করে পরে কাজে যোগদান করে। পরবর্তী দুপুর ২টা থেকে আবারও একই দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। বিকেল ৫টার সময় কারখানা ছুটি হয়ে গেলে শ্রমিকরা সবাই বাসায় চলে যায়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের দাবির সঙ্গে একাগ্রতা প্রকাশ করে কারখানা গেটে একটি নোটিশ সাঁটিয়ে দেয়।
শ্রমিকদের দাবি, বিজিএমইএ কাঠামো অনুযায়ী বেতন কাঠামোর ১০০% গ্রেডিং করতে হবে, ঈদের ছুটিতে কোন জেনারেল ছুটি কাটানো যাবে না, বাৎসরিক পিকনিকের আয়োজন করতে হবে। উপকার স্বজন প্রীতি চলবে না, কারখানায় যোগদান অনুযায়ী ছুটির টাকা প্রদান করতে হবে। যে পাওনা রয়েছে তা চলতি মাসে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করাসহ আরও বেশ কিছু দাবি রয়েছে শ্রমিকদের।
তুসুকা গ্রুপের পরিচালক মো.
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করছে। কারখানার সামনে পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।