মধ্যাহ্নভোজের পর শান্তকে হারাল বাংলাদেশ
Published: 20th, April 2025 GMT
মধ্যাহ্নভোজের পর খেলা শুরু হলে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকে বাংলাদেশের দুই ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুমিনুল হক। তবে দলীয় ৯৮ রানে শান্তর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুমিনুলের সঙ্গে শান্তর ৬৬ রানের জুটি ভাঙেন মুজারাবানি। নাজমুল হোসেন শান্ত ৪০ করে মুজারাবানির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন। ক্রিজে নতুন ব্যাটার মুশফিকুর। ৩৩ ওভার শেষে ৯৮ রানে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। ০ রানে মুশফিক ও ২৫ রানে আছেন মুমিনুল।
বৃষ্টি বাগড়ায় ৩০ মিনিট পর খেলা শুরু
বৃষ্টির বাগড়ায় ভেসে গেল ৩০ মিনিট। দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু হলো । মধ্যাহ্নভোজের আগে ২ উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান করেছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল ৪৩ বলে ৩০ ও মুমিনুল হক অপরাজিত আছেন ৪৬ বলে ২১ রানে।
মধ্যাহ্নভোজের পর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
সকাল থেকেই ছিল বৃষ্টির চোখরাঙানি। মধ্যাহ্নভোজের ঘন্টাখানিক আগে থেকেই আলো কমে যাওয়ায় ফ্লাডলাইট চালু করা হয়। কৃত্রিম আলোতে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি পর্যন্ত খেলা হয়েছে। তবে এই বিরতির মাঝেই নেমেছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ঢেকে দেওয়া হয়েছে উইকেট ও এর আশপাশের জায়গা ফলে নির্ধারিত সময়ে শুরু করা যায়নি দ্বিতীয় সেশনের খেলা।
রোববার সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিনে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৮৪ রান। শান্ত ৪৩ বল খেলে পাঁচটি চার মেরে অপরাজিত ৩০ রানে, আর মুমিনুল ৪৬ বলে দুটি চারে অপরাজিত ২১ রানে ব্যাট করছেন। এই জুটির পঞ্চাশ পূর্ণ হয় ৭৭ বলে।
এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা অবশ্য ছিল হতাশাজনক। প্রথম ঘণ্টাতেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। মাত্র ৩২ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এরপর ধৈর্য আর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ইনিংস মেরামতের কাজটা এগিয়ে নিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। তাদের অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটিতে প্রথম সেশন শেষে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে টাইগাররা।
এখন দেখার বিষয়, খেলা শুরুর পর এই জুটি কতদূর টেনে নিতে পারেন শান্ত ও মুমিনুল।
বাংলাদেশের একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, জাকের আলি (উইকেটরক্ষক), তাইজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, খালেদ আহমেদ।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: বেন কারান, ব্রায়ান বেনেট, নিকোলাস ওয়েলচ, শন উইলিয়ামস, ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), ওয়েসলি মাধভেরে, নিয়াশা মায়াভো (উইকেটরক্ষক), ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, রিচার্ড এনগারাভা, ব্লেসিং মুজারাবানি, ভিক্টর এনাউচি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।
ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’
সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।
প্রতিবাদ, বিক্ষোভসেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।
পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।
দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।
সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।
কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।