দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ঢাকার একটি ফ্ল্যাট, তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট, তিনটি গাড়ি জব্দ এবং ৭০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ৩৭ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার ৭৪৭ টাকা রয়েছে। 

রবিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। 

জব্দ করা ফ্ল্যাটটি ঢাকার পরিবাগের প্রিয় প্রাঙ্গণে, আর অ্যাপার্টমেন্ট তিনটি বনানীর পিপি টাওয়ারে। এসবের মূল্য ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ ৫ হাজার ৯৪৭ টাকা। গাড়ি তিনটির মূল্য ধরা হয়েছে দুই কোটি ৪৭ লাখ ১১ হাজার ৫২৯ টাকা।

দুদকের পক্ষে কমিশনের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম এসব সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি নসরুল হামিদের বিপুর নামে  স্থাবর সম্পদ এবং অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। নসরুল হামিদ বিপুর নামে অর্জিত এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর, দলিল সম্পাদন বা অন্য কোনো পন্থায় মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তর করার সম্ভবনা রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার নামে অর্জিত স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধকরণ করা আবশ্যক।

এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর বিপুর বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করার কথা জানায় দুদক।

এছাড়া, তার ছেলে জারিফ হামিদ ও স্ত্রী সীমা হামিদের নামেও দুদক আলাদা মামলা করেছে। সেসব মামলায়ও আসামি হিসেবে বিপুর নাম রয়েছে।

নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ: ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী তারিন হোসেনের নামে গুলশানে থাকা একটি ফ্ল্যাট, গ্যারেজ ও কমনস্পেস জব্দের আদেশ দিয়েছেন একই আদালত। 

 দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালাম এ সম্পদ জব্দ চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, মুজিবুর রহমান চৌধুরীর স্ত্রী তারিন হোসেনের নামে মোট ১০ কোটি ৩২ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৮ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। 

তদন্তকালে জানা গেছে, মো.

মুজিবুর রহমান চৌধুরী গুলশান আবাসিকয় ১০ কাঠা ৩ ছটাক জমির ওপর নির্মিত দি সেরেনিটি নামে দুটি বেজমেন্টসহ ১৩ তলা আবাসিক ভবনের ৭ম তলার (একটি গ্যারেজ ও কমনস্পেস সহ) সর্বমোট ৫১৭২ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট এবং অচিহ্নিত ১৭০ অযুতাংশ ভূমি রয়েছে। এই সম্পদ ২০১৩ সালের ২৯ জানুয়ারি এলটমেন্ট এগ্রিমেন্ট মোতাবেক মজিবুর রহমান চৌধুরীর প্রথম স্ত্রী মুনতারীন মুজিব চৌধুরীর নামে করা হয়। পরবর্তীতে তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রী তারিন হোসেনের নামে ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়। যা মুজিবুর রহমান চৌধুরী তার অর্জিত অবৈধ অর্থ দিয়ে ক্রয় করেন। 

দুদক অনুসন্ধান শুরু করার পর থেকে তারিন হোসেন এসব সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন মর্মে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। এ অবস্থায় এসব সম্পদ ক্রোক করা একান্ত প্রয়োজন। এসব সম্পদ ক্রোক করা না হলে তা অন্যত্র হস্তান্তর বা বেহাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

ঢাকা/মামুন/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ব র রহম ন চ ধ র নসর ল হ ম দ অবর দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ