জাহিদুল হত্যা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ নেতাকে দায়ী করলেন ছাত্রদল সভাপতি
Published: 20th, April 2025 GMT
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ও প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামকে (পারভেজ) ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা জড়িত।
রাকিবুল বলেছেন, পারভেজের ওপর হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তুচ্ছ একটি ঘটনার জেরে একজন মেধাবী ছাত্রকে প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন রাকিবুল ইসলাম।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম।
তবে রাকিবুলের এ অভিযোগকে ‘ঘৃণ্য মিথ্যাচার’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের ফেসবুক পেজে রাকিবুলের এ অভিযোগের বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, ‘এক মৃত ব্যক্তির লাশকে ব্যবহার করে ছাত্রদল যে নোংরামি করছে, তা নতুন বাংলাদেশ ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কাম্য নয়।’
রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (২২) ছুরিকাঘাতে নিহত হন। গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আজ ওই ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে রাকিবুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের অপকৌশল অনুসরণ করে বৈষম্যবিরোধী নেতারা দীর্ঘদিন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করতে তারা নানা ষড়যন্ত্রের কৌশল অবলম্বন করেছে। পারভেজের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড পেজ থেকে অশোভনীয় ভাষায় যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে, এর নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) অভিযুক্তদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করতে পারত। কিন্তু তা না করে অশোভন ভাষায় আক্রমণ এবং তদন্তের আগেই অভিযুক্তদের পক্ষ নেওয়া প্রমাণ করে তারা অপরাধ আড়াল করতে বিশ্বাসী।
পারভেজকে হত্যার ঘটনায় প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মেহরাজ ইসলামকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, মামলার বাকি আসামিরা হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শোভহান নিয়াজ (তুষার), যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজী, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির অপর দুই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা আবু জর গিফারি ও মাহাদী হাসান। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এসব নেতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সবার সঙ্গে সমতা ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে পারছে না বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তোলেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বিভিন্ন সময় দফায় দফায় আলোচনা করলেও ছাত্রদলের মতো বৃহৎ এবং জুলাই আন্দোলনে সর্বাধিক শহীদের ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করেনি। বিভিন্ন ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন না। প্রশাসনে এখনো হাসিনার প্রেতাত্মারা লুকিয়ে আছে। আর এদের উৎসাহ ও আশ্রয় দিচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় নেতা, বিভিন্ন ঘটনায় যা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বনানী থানায় গিয়েও বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কাদের নামে মামলা হবে, সেই তালিকা ধরিয়ে দিয়েছিলেন। মূল অপরাধীদের আড়াল করার জন্য তাঁরা বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করছে বলেও অভিযোগ করেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, সে কারণে তাদের (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তাদের চেইন অব কমান্ড নেই। তারা সোশ্যাল মিডিয়ার স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মব জাস্টিসের সূচনা করে দেয়।
রাকিবুল ইসলাম বলেন, তাদের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অনেক বড় বড় অভিযোগ এসেছে। একটি অভিযোগের কোনো বিচার হয়নি। তারা দায় স্বীকার করেনি। তবে ছাত্রদল সংগঠনের কারও বিরুদ্ধে সামান্য অভিযোগ পেলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু আফসান মুহাম্মদ ইয়াহিয়া, সহসভাপতি এইচ এম আবু জাফর, ইজাজুল কবির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হুরায়রা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিবাদ
এদিকে রাকিবুলের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুক পেজে দেওয়া প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলেছে, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজীকে দায়ী করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ অন্যরা। একজন মৃত ব্যক্তির লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ছাত্রদলের এমন ঘৃণ্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সোবহান নিয়াজ তুষার এবং হৃদয় মিয়াজী, পারভেজ হত্যার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সবচেয়ে বড় সংগঠন PUSAB তাদের ফেসবুকে যে তিনজন হত্যাকারীর নাম উল্লেখ করেছে, সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উল্লিখিত দুজন নেতা অন্তর্ভুক্ত নন। দেশের সব প্রথম সারির মিডিয়াতে পারভেজ হত্যার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোথাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নেতা–কর্মীর বিন্দুমাত্র অভিযোগের কথা বলা হয়নি। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেখানেও সোবহান নিয়াজ তুষার এবং হৃদয় মিয়াজীর কোনো উপস্থিতি ও হত্যার সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা দেখা যায়নি। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক ইতিপূর্বে ‘দায় দিয়ে দাও’ সংস্কৃতির প্রচলন দেখেছি প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলনে। তিনি পারভেজ হত্যার ক্ষেত্রে একই সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি করছেন।
প্রতিবাদে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ছাত্রদল কর্মীরা যাচাই-বাছাই না করে ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম জড়াচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কেউ একটি প্রমাণও দিতে পারেননি। প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোনো ব্যক্তির বরাতেও তুষার ও হৃদয়ের কথা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আমাদের ছাত্রলীগের ‘চালাই দেন’ গুজব বাহিনীর কথাই মনে করায় আরও একবার। একজন মৃত ব্যক্তির লাশকে ব্যবহার করে ছাত্রদল যে নোংরামি করছে, তা নতুন বাংলাদেশ ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কাম্য নয়।
কোনো প্রমাণ ছাড়াই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন নেতার নাম জড়িয়ে ফেসবুকে মব ট্রায়াল চালানোতে তাঁদের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটছে। একই সঙ্গে পারভেজ হত্যার মূল আসামিরা অনালোচিত থেকে যাচ্ছে। পারভেজ ছাত্রদল কর্মী হলেও ছাত্রদলেরই সাধারণ সম্পাদক হত্যাকারীদের কেন আড়াল করতে চাইছেন, সেটি আমাদের বোধগম্য নয়। হত্যাকারীদের আড়াল করতে চাওয়ার পেছনে তাঁর অন্য কোনো দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটি গোয়েন্দা বাহিনীকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। সর্বোপরি ছাত্রদলকে অনুরোধ জানাব স্বীয় দলের কর্মীদের লাশ ব্যবহার করে নোংরামির রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ক ব ল ইসল ম ছ ত রদল র স ন ছ ত রদল ফ সব ক স গঠন সরক র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।
জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।
পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।
জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।
মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।