স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান স্থানীয় সরকারবিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ। সংবাদ ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে, নাকি পরে, তা নিয়ে অনেক দিন ধরে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আপনাদের সুপারিশ কী?

এই প্রশ্নের জবাবে সংস্কার কমিশন প্রধান তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইচ্ছা করেই এ বিষয়ে স্পষ্ট করে তাঁরা কিছু বলেননি। তাঁরা বলেছেন, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। স্থানীয় সরকার নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ, জাতীয় সংসদ নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। একটি করলে আরেকটি করা যাবে না, এ–জাতীয় শর্তই অমূলক কথা। দুটিই করতে হবে। তবে তাঁরা চান স্থানীয় সরকার নির্বাচন অবিলম্বে করা হোক। কারণ, এখন সারা দেশে একটা শূন্যতা। ইউনিয়ন, জেলা-উপজেলায় সবখানেই শূন্যতা, পৌরসভা-সিটি করপোরেশনেও। এই শূন্যতার ফলে দেশে একটা অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। স্থিতিশীল ব্যবস্থার জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব নিয়ে আসা দরকার। এটি কখন কীভাবে করবেন, এটি তাঁরা পরিষ্কার করে বলেননি। কারণ, জাতীয় ঐকমত্য না হলে এটি বলে একটি বিভেদ সৃষ্টি করার দরকার নেই। তাঁরা প্রয়োজনটির কথা বলেছেন।

নির্বাচনের আগে সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মূল সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন করলে কোনো লাভ হবে না। সেটি জাতীয় নির্বাচন বলেন, আর স্থানীয় নির্বাচন বলেন। সে জন্য আমরা সংস্কারকে প্রাধান্য দিয়েছি। সংস্কার করার পর আপনি নির্বাচন করেন।’

সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স থ ন য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ