গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও, তোপের মুখে ওসি
Published: 21st, April 2025 GMT
গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও করেছেন স্বজনরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা থানা ঘেরাও করে রাখেন তারা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় গণগ্রন্থাগারে অস্থায়ী পুলিশ স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার নাম সাগর হাসান। তিনি উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি সফর আলী কলেজের ছাত্র। উপজেলার কল্যান্দী গ্রামের কবির হাসানের ছেলে তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পুলিশ কল্যান্দী এলাকা থেকে সাগর হাসানকে আটক করে থানায় নেয়। সকালে সাগরের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার স্বজনরাসহ শত শত নারী পুরুষ মিছিল নিয়ে থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন এবং থানা ঘেরাও করে রাখেন। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকে, ‘আমার ভাই থানায় কেন, জবাব চাই, ‘আমারে ছেলে থানায় কেন, জবাব চাই।’ এলাকাবাসীর সঙ্গে সরকারি সফর আলী কলেজের সাগরের সহপাঠীরা যোগ দেন। শিক্ষার্থীরা সাগরের মুক্তির দাবীতে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ নিরাপত্তার কথা ভেবে থানার গেট বন্ধ করে দেয়। পরে ওসি গেটের ভেতর থেকে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। এ সময় তারা ওসিকে সাগরকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চান। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি থানার ওসি। একপর্যায়ে অবরোধকারীদের তোপের মুখে পড়ে ওসি থানার ভেতরে চলে যান। মুহূর্তেই থানা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে অবরোধকারী থানা এলাকা থেকে চলে যান। তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় সাগরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
লামিয়ার মৃত্যুতে আরও সংকটে পরিবার, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মা ও বোন
গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে মারা যান স্বামী জসিম উদ্দিন। এরপর গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মারা যান বড় মেয়ে লামিয়া আক্তার (১৭)।
স্বামী এবং মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ রুমা বেগম (৩৫)। একই অবস্থা লামিয়ার ছোট বোন বুশরা আক্তারের (১৪)। লামিয়া মারা যাওয়ার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে লামিয়াকে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফনের পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে স্বজনরা পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্বজনরা এ দুজনকে নিয়েও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে লামিয়ার গলায় ফাঁস দেওয়া নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রবিবার মাগরিব নামাজ বাদ পাঙ্গাশিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে লামিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ নামাজে অংশ নেন বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ স্থানীয় শতশত মানুষ।
পরিবার জানায়, গত ১৮ মার্চ দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন লামিয়া। সাহসিকতার সাথে তিনি নিজে থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। দুমকি থানা পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকেই লামিয়া গভীর মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। সামাজিক অবহেলা এবং ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় তার মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়। সেই হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে পরিবারের ধারণা।
লামিয়ার দাদা শহীদ জসিম উদ্দিনের বাবা আবদুস সোবাহান বলেন, “আমরা এ শোক সইতে পারছিনা। কাঁদতে কাঁদতে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আমরা কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ছেলের বউ ও ছোট নাতিকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি।”
বলেন, “যাদের কারণে লামিয়া আত্মহত্যা করেছে আমরা তাদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।”
দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা আবুজর মোহাম্মদ ইজাজুল হক বলেন, “লামিয়ার মা এবং বোন হাসপাতালের ভর্তির বিষয়টি আমাকে অবগত করেনি। তবে তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হবে।”
ঢাকা/ইমরান/টিপু