মঙ্গল গ্রহে রহস্যময় খুলি আকৃতির পাথরের খোঁজ
Published: 21st, April 2025 GMT
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মার্স রোভার পারসিভারেন্স মঙ্গল গ্রহে একটি রহস্যময় খুলি আকৃতির পাথরের ছবি তুলেছে। খুলি আকৃতির পাথরের উৎস সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য মেলেনি। স্কাল হিল নামে অভিহিত রহস্যময় পাথরটি ১১ এপ্রিল পারসিভারেন্স রোভার জেজেরো ক্রেটারের প্রান্তে মাস্টক্যাম–জেড যন্ত্র ব্যবহার করে আবিষ্কার করেছে।
ছবিতে দেখা যায়, পাথরের চারপাশের বেশির ভাগ অঞ্চল হালকা রঙের ও ধূলিময়। খুলি আকৃতির পাথরটি অন্ধকার, কৌণিক ও ক্ষুদ্র গর্তে ঢাকা। নাসা জানিয়েছে, এই ভাসমান পাথরটি দেখতে কিছুটা গাঢ় রঙের। কৌণিক পৃষ্ঠের সঙ্গে চারপাশের হালকা রঙের শিলাস্তরের বিপরীতে স্বতন্ত্র ধরনের পাথরটি। পাথরটিতে কয়েকটি ছোট গর্ত দেখা যায়।
পাথরের উৎস অনিশ্চিত থাকলেও নাসা মনে করেছে, স্কাল হিলের গর্ত ক্ষয় থেকে হয়েছে কিংবা কোনো উল্কার পতনের কারণে তৈরি হতে পারে। নাসা জানিয়েছে, স্কাল হিলের গর্ত পাথরের কণা ক্ষয় বা বাতাসের ঘর্ষণের মাধ্যমে তৈরি হতে পারে। অতীতে হয়তো স্কাল হিল কাছাকাছি কোনো শিলাস্তর থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েও তৈরি হতে পারে।
নাসার গবেষক দল বিশ্বাস করছে, স্কাল হিলের রং কিউরিওসিটি রোভার কর্তৃক আগে গেইল ক্রেটারে পাওয়া উল্কার রঙের সঙ্গে কিছুটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। কোথা থেকে এই পাথরগুলো এসেছে ও কীভাবে তারা মঙ্গলে অবস্থান করছে, তা নিয়ে ভালোভাবে বোঝার জন্য কাজ করছে নাসা।
এসব পাথরের মধ্য থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের উত্তর খুঁজছেন। এ বছরের জানুয়ারিতে নাসার মার্স রিকনস্যান্স অরবিটার (এমআরও) বেশ কিছু নতুন ছবি সংগ্রহ করে। ছবিতে উত্তর গোলার্ধে হিমায়িত বালুর টিলায় ঢাকা মঙ্গলপৃষ্ঠ দেখা যায়। পৃথিবীর টিলার বিপরীতে মঙ্গলের টিলা গতিশীল বলা হচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে একটি নাসা লাল গ্রহ মঙ্গলপৃষ্ঠের বরফ জমাট পানির নিচে প্রাণের সম্ভাব্য আবাস থাকতে পারে বলে জানিয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।