সংঘর্ষ ও সহিংসতা এড়াতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) এবং বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা সিটি কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৩টা ২৪ মিনিটে কলেজটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এফ এম মোবারক হোসাইন এই ঘোষণা দেন।
এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে দুই কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিউ মার্কেট থানার ওসি মোহসিন উদ্দিন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের কাছে গিয়ে ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করলে ওই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।
ওসি মোহসিন উদ্দিন বলেন, “সোমবার নাকি ঢাকা কলেজের এক ছেলেকে সিটি কলেজে ছাত্ররা মেরেছে। মঙ্গলবার ওই ঘটনার বদলায় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা সিটি কলেজের ছাত্রকে মারধর করলে সংঘাতের সূচনা হয়।”
সময় গড়ালে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেন দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সংঘাত হলেও ওই এলাকার রাস্তায় যান চলাচল ‘স্বাভাবিক রয়েছে’ বলে জানিয়েছের পুলিশের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘনঘন উত্তেজনা ও সংঘর্ষে ভুগতে হতে হয় আশপাশের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের। এ ধরনের ঘটনায় তারা বিরক্ত সবাই।
চলতি মাসের ১৫ তারিখেই এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন। ওইদিন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরুর পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকার সায়েন্স ল্যাব মোড়ের কাছে এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের ক্যাম্পাস। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই কয়েকবার করে সংঘর্ষে জড়ায় নানা কারণে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘কথা কাটাকাটির’ জেরে সায়েন্সল্যাব এলাকাতেই সংঘর্ষে জড়ায় সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ায়।
প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে সেদিন ১৮ জন আহত হন। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে ওই দিন আইডিয়াল কলেজের নামফলকও খুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এর পাঁচদিন পর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ঢাকা কলেজের একটি বাস ভাঙচুর করেন আইডিয়ালের শিক্ষার্থীরা।
গত ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন দুপুরে কলেজের দুটি বাস সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার জেরে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই মারামারি চলে, যাতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার তথ্য দেয় ঢাকা কলেজ।
এরপর ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের প্রতিনিধিসহ পুলিশের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ধানমন্ডি এলাকার এসব কলেজগুলোর ছোট ছোট সমস্যা যেন বড় রূপ না নেয়, তা নিশ্চিত করতে এই কমিটি কাজ করবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এর মধ্যে আবারো ‘সামান্য বিষয়’ নিয়ে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/রায়হান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ই কল জ র শ ক ষ র থ কল জ র শ ক ষ র থ র কল জ ও স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’