ফেনীর সোনাগাজীতে শরীর থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে আবুল হাসেম (৫০) নামে এক বিএনপি সমর্থককে হত্যা করেছে বোরকা পরিহিত সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. বায়েজীদ আকন বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। রাসেল নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।”

নিহত আবুল হাসেম সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরদরবেশ গ্রামের আবদুর শুক্কুরের ছেলে। কয়েক বছর ধরে তিনি পরিবার নিয়ে সোনাগাজী পৌর এলাকার পশ্চিম বাজারে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে ঋণের চাপে কৃষকের আত্মহত্যা

নোয়াখালীতে ব্যবসায়ীকে হত্যার পর মরদহ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোরকা পরিহিত ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী ওলামা বাজার এলাকায় আবুল হাসেমের পথরোধ করেন। তারা তাকে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই ব্যক্তির বাম হাত ও পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। সন্ত্রাসীরা আবুল হাসেমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে যান। সেখানে চিকিৎসক আবুল হাসেমকে মৃত ঘোষণা করে মরদেহ মর্গে পাঠান। 

নিহতের ভাতিজা শেখ ফরিদ জানান, তার কাকা মহিষের দুধ সংগ্রহ করতে ভোরে মোটরসাইকেলে করে সাহেবের ঘাট ব্রিজ এলাকায় যাচ্ছিলেন। ওলামা বাজার এলাকায় তিনি হামলার শিকার হন। মৃত্যুর আগে তিনি কয়েকজন হামলাকারীর নাম বলে গেছেন। তাদের মধ্যে রাসেল নামের একজনকে পুলিশ আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত আবুল হাসেম ২০২১ সালে একই এলাকার কৃষক বেলাল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তার পরিবারের অন্তত ১০ সদস্যকে আসামি করা হয়। দীর্ঘ তিন বছর কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং সোনাগাজীতে বসবাস শুরু করেন।

সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, “আবুল হাসেম আমাদের দলের সমর্থক ছিলেন। কোনো পদে না থাকলেও মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছি।”

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ব এনপ এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ