খুবির হল সংযুক্তিতে দীর্ঘসূত্রতা, উদ্বেগে শিক্ষার্থীরা
Published: 22nd, April 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সিট সংযুক্তির প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। নিয়মিত সময়সূচির বাইরে গিয়ে বরাদ্দ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা ও আর্থিক চাপ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, স্নাতক সমাপ্ত শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার পরপরই নতুন শিক্ষার্থীদের সিট সংযুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে এই প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই থেকে তিন মাস, এমনকি তার চেয়েও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের একদিকে যেমন বাড়তি বাসাভাড়া গুনতে হচ্ছে, অন্যদিকে হল সিট পাওয়া নিয়েও পড়তে হচ্ছে অনিশ্চয়তায়।
সিটপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী নাহিদ মোল্লা বলেন, “চার মাসের অনিশ্চয়তার মহাযোগ্যের শেষ হলো আজ। সেই জানুয়ারিতে আবেদন, ফেব্রুয়ারিতে ভাইবা—এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে অবশেষে সেই সোনার হরিণ হাতে পেলাম।”
অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী লাদেন হোসেন জানান, আমরা জানুয়ারিতে আবেদন করি, ফেব্রুয়ারিতে ভাইভা দিই, আর মার্চে বাসা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু হলে উঠতে গিয়ে এপ্রিল মাসে গিয়ে পৌঁছায় সিট বরাদ্দ। তখন বাধ্য হয়ে বাসাভাড়াও পরিশোধ করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ছাত্র হল ও দুটি ছাত্রী হলে আবাসন সুবিধার আওতায় আছে প্রায় ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র হলগুলোতে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৩৬৪, যেখানে সংযুক্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার ২৩৬ জন।
এর মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হলে আসন সংখ্যা ৫৭৬, সংযুক্ত ১,৬৮৫; খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা হলে আসন সংখ্যা ৩৮৪, সংযুক্ত ১,২৮৭; খান জাহান আলী হলে আসন সংখ্যা ৪০৪, সংযুক্ত ১,২৬৪ জন।
এই চরম বৈষম্য ও দীর্ঘসূত্রতা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রুহুল আমিন হলের শিক্ষার্থী নাঈম শেখ। তার মতে, সিট সংযুক্তির জন্য কোনো নির্ধারিত সময়সীমা না থাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকট সমাধানে প্রয়োজন দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগ, নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি আবাসন পরিকল্পনা।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড.
হাসিবুল/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আসন স খ য
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে হামলা: ট্রাম্প ৬০ দিনের সময়সীমার কথা বলছেন, সেটি কী?
ইরানকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিনই দেশটিতে ভয়াবহ হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল। আজ শুক্রবার ট্রাম্প নিজেই ওই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানান।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুর দিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসার বিষয়ে একটি চুক্তিতে রাজি হতে চাপ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিতে পৌঁছাতে ওয়াশিংটন–তেহরান আলোচনা সফল করতে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ইরান চুক্তি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ১২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল। সেদিন থেকেই এই ৬০ দিনের সময়সীমা গণনা শুরু হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ জুন ইসরায়েল হামলা চালাল ইরানের অন্তত ৮টি শহরে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ সিএনএনের সাংবাদিক ডানা বাসকে বলেন, ‘আমার কথা শোনা উচিত ছিল ইরানের। যখন আমি বলেছিলাম—আপনি জানেন, আমি ওদের ৬০ দিনের এক সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম, আপনি জানেন কি না, জানি না, কিন্তু আমি ওদের ৬০ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলাম, আর আজ ৬১তম দিন।’
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উদ্দেশে পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প ইরানকে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
বছরের শুরুর দিকে ফক্সনিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিঠির প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি, ইরান আলোচনায় আসবে—আমি তাদের চিঠি লিখে জানিয়েছি, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, আমাদের যদি সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে সেটা ইরানের জন্য ভয়াবহ হবে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি আশা করি, তোমরা আলোচনা করবে। কারণ, সেটা ইরানের জন্য অনেক ভালো হবে।’
ইরানের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং আলোচনায় জড়িত ব্যক্তিরা জানতেন যে সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চাপ ক্রমেই বাড়ছিল। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা আগে বলেছিলেন, ৬০ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও আলোচনা চলবে। কিন্তু এখন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর হামলা চালানোর পর এই আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে—যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে জোর দিচ্ছেন।