খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় দলটি। পাশাপাশি কুয়েটের হল খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত। 

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদল ও বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হলেও এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’

সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘বহিষ্কৃতদের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের ৭জন কর্মী রয়েছেন বলে ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্বীকার করেছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুই মাস আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কুয়েট শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দিলেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যা চরম দায়িত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ। বুধবার ইউজিসির একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিনে পরিদর্শনে কুয়েটে যাবেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ধীর পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলার বহিঃপ্রকাশ, যা হতাশাজনক।’

এনসিপি’র লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে প্রশাসনের অবহেলা ও সরকারের দায়সারা মনোভাব হতাশাজনক। আমরণ অনশনে অংশ নিয়ে তিন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। এই অবস্থায় ভিসি মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ এবং ইউজিসির নেতৃত্বে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে কুয়েটের সংকট সমাধানের দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, নিজাম উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন শিশির ও সাইফ মোস্তাফিজ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের কতিপয় বিপথগামী বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিকেলে অনুষদীয় চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা করেন।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাহা’র নেতৃবৃন্দ ও অনুষদের ডিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ তুলে মতামত দেন।

আরো পড়ুন:

গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫

ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়

আলোচনা সভা শেষে বাহা ও ওই অনুষদ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই কার্যক্রমে অনুষদের সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন ও হেয় করতে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপচেষ্টায় লিপ্ত।

বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয় এবং প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের সমাবেশে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী বলেন, “আমরা পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন লেভেলের কয়েক’শ গত ১ সপ্তাহ ধরে আমাদের যৌক্তিক দাবি কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদগামী বলে সম্বোধন করছেন, তাদের আমরা এ অনুষদ চত্বর থেকে লালকার্ড দেখাই। কোনো বিবৃতি বা হুমকি দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না।”

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “বাকৃবিতে চলমান যৌক্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাহা’র মহাসচিব ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও, তার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপথগামী বলা হয়। এছাড়া আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর আন্দোলন হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা মিথ্যা, অপমানজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের