গাজীপুরের শ্রীপুরে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ১ নম্বর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় নিট হরাইজন কারখানার শ্রমিকেরা এই আন্দোলন শুরু করেন। পরে তাঁরা বেলা সোয়া ১১টায় সড়ক থেকে সরে পাশে অবস্থান নেন।

বেলা ১১টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের দুই পাশের লেনে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। সেখানে উপস্থিত আছেন শিল্প পুলিশ ও শ্রীপুর থানা-পুলিশের সদস্যরা। ‌সড়কে অবস্থান করায় ঢাকা ও ময়মনসিংহ অভিমুখী লেনে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ।

বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাঁরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে, এমন আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে পাশের খোলা জায়গায় অবস্থান নেন। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

আকলিমা খাতুন নামের এক শ্রমিক বলেন, গত সোমবার কারখানার ৪০ জন শ্রমিককে বিনা কারণে ছাঁটাই করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা গতকাল মঙ্গলবার কারখানায় গিয়ে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের ফেরত আনার জন্য আবেদন করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ তা বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু তারা কথা রাখেনি।

আরও পড়ুনগাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে তুসুকা গ্রুপের ৬ কারখানায় ৩ দিনের ছুটি২১ এপ্রিল ২০২৫

আরেক শ্রমিক শাকিল আহমেদ বলেন, আজ কারখানায় গিয়ে দেখেন, ফটকে কারখানা বন্ধের নোটিশ টানানো। ৪০ জন শ্রমিককে ফেরত নেওয়ার দাবি করায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। দ্রুত তাঁদের বহাল করে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

এসব বিষয়ে নিট হরাইজন কারখানা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন। পরে সেনাসদস্যরা এসে আলোচনা করেন। এরপর শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে যান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ