পাঁচ দিনেও খোঁজ মেলেনি মাদারীপুরে হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশুর
Published: 23rd, April 2025 GMT
মাদারীপুরে সরকারি হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া ছয় মাসের শিশু আবদুর রহমানকে পাঁচ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সন্তানকে হারিয়ে উৎকণ্ঠা আর হতাশায় দিন কাটছে মা-বাবার। পুলিশ বলছে, শিশুটিকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।
গত শনিবার দুপুরে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ষষ্ঠ তলার শিশু ওয়ার্ড থেকে চুরি হয় আবদুর রহমান। শিশুটির বাবা সুমন মুনশি ও মা সুমি আক্তার সদর উপজেলার মহিষের চর পাকা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা।
সুমন মুনশি বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ। সব জায়গায় পাগলের মতো তন্নতন্ন করে খুঁজতেছি। বারবার পুলিশের কাছে গিয়েছি, শুধু আশ্বাস পাচ্ছি। আমরা খুব ভয়ের মধ্যে আছি, আতঙ্ক আর হতাশার মধ্যে দিন কাটছে। আমার স্ত্রী খুব ভেঙে পড়েছে। কোনো কিছুই খেতে পারছে না। ছেলেকে ফিরে পেতে দিনরাত কান্নাকাটি করে যাচ্ছে।’
শিশুটির মা সুমি আক্তার রোজই থানায় আসেন তাঁর সন্তানের খোঁজ নিতে। তিনি বলেন, ‘চোখের পলকে এক মহিলা বোরকা পরে এসে আমার ছেলেকে কোলে নিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে আমার ছেলেকে কোলে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি অনেক চিৎকার করেছি, হাসপাতাল থেকে তখন কেউ এগিয়ে আসে নাই। আমি শুধু আমার বুকের ধনকে ফেরত চাই। যেভাবেই হোক, আমি আমার ছেলেকে চাই। সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি-আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন।’
হাসপাতাল ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুমি বড় মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় গোলাপি বোরকা পরা এক নারী আবদুর রহমানকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বারান্দায় যান এবং মুহূর্তেই শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই নারী শিশুকে কোলে নিয়ে নিচে নামেন এবং দ্রুত একটি ইজিবাইকে উঠে হাসপাতাল এলাকা ত্যাগ করেন।
ঘটনার পরদিন শিশুটির বাবা থানায় মামলা করেন। মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল হোসেন বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারে একাধিক দল কাজ করছে। ইজিবাইকচালক হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে চুরি করা নারীকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ছ ল ক
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’