ফেনীতে বিএনপি কর্মীকে হত্যায় গ্রেপ্তার ৫
Published: 23rd, April 2025 GMT
ফেনীর সোনাগাজীতে আবুল হাসেম (৫০) নামে এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীকে নোয়াখালী ও অন্য চার আসামিকে সোনাগাজীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, মূল পরিকল্পনাকারী আক্তার হোসেন (৩৫), রাকিব (২৫), সোলেমান (৪৫), শেখ রাসেল (৩০) ও শিপন (৩০)। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারের পর আসামিদের দেওয়া তথ্যে তিনটি বোরকা, রক্তমাখা দুটি লোহার রড, একটি দা, একটি ওড়না ও তিন প্যাকেট বিস্কুট উদ্ধার করা হয়েছে।
দিনে-দুপুরে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সোনাগাজীসহ পুরো ফেনীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, ‘‘এই নৃশংস হত্যার দ্রুত বিচার চাই। তবে কেউ যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়, প্রশাসনকে সেই বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
আড়াইহাজারে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, স্বামী আটক
রাউজানে যুবদল কর্মীকে মাথায়-বুকে গুলি করে হত্যা
চরদরবেশ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘এ ধরনের নির্মম হত্যার ঘটনায় শুধু নিন্দা নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে আইনের সহযোগিতা করতে হবে, যেন কেউ রেহাই না পায়।’’
সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন জানান, হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। চার বছর আগের ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভোরে সোনাগাজী উপজেলার ওলামা বাজার এলাকার কাছে আবুল হাসেমের ওপর হামলা চালানো হয়। তিনি প্রতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে মহিষের দুধ সংগ্রহে যেতেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বোরকা পরা একদল দুর্বৃত্ত তার মোটরসাইকেলের পথরোধ করে। তাকে রাস্তার পাশের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাম হাত ও পা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। পরে তাকে রাস্তার ওপর ফেলে রেখে চলে যায় হামলাকারীরা।
ঘটনার দিন নিহতের বাবা আব্দুস শুক্কুর ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সোনাগাজী, চরদরবেশ ও নোয়াখালীর চর জব্বার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নতুন সওদাগর হাট জামে মসজিদ মাঠে আবুল হাসেমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
ঢাকা/সাহাব/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ব এনপ র কল প
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’