নোয়াখালীতে খেতে ঘাস কাটতে গিয়ে মিলল নারীর মরদেহ
Published: 23rd, April 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক তরুণ একটি পরিত্যক্ত খেতে ঘাস কাটতে গিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর (৫৫) মরদেহের সন্ধান পান। মহরদেহটি পচে বিকৃত হয়ে কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমান উল্লাহপুর ইউনিয়নের কাঁচিহাটা এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের পূর্ব পাশের সড়কের পাশের একটি পরিত্যক্ত খেতের ভেতর থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এটি কয়েক সপ্তাহ আগের হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা দেড়টার দিকে স্থানীয় এক তরুণ ঘাস কাটতে ওই খেতের দিকে যাওয়ার সময় ঘাসের ভেতর লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। তখন আশপাশের মানুষ এগিয়ে এসে থানা-পুলিশকে খবর দেন। পরে বিকেলে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। থানা থেকে বিষয়টি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) জানানো হয়। কুমিল্লা থেকে সিআইডির বিশেষ দল এলে আলামত সংগ্রহের পর সেটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার করা লাশটি একজন নারীর। শরীরের নষ্ট হয়ে যাওয়া পোশাক ও দুই হাতের চুড়ি দেখে প্রাথমিকভাবে সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই নারীর মাথার খুলি থেকে চুলগুলো আলাদা হয়ে ঝরে পড়েছে। চুলের রং সাদা। নারীর পরনে রাতের পোশাক (ম্যাক্সি) ছিল। বয়স ৫০ থেকে ৫৫ বছর হতে পারে। শরীরের সবকিছুই পচে গেছে। কেবল হাড়গুলো অবশিষ্ট আছে।
ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, ওই নারী কীভাবে সেখানে গেলেন। কীভাবে তাঁর মৃত্যু হলো, কোনো প্রশ্নেরই জবাব তাঁদের কাছে নেই। আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর দিয়ে ওই নারীর পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সিআইডির একটি বিশেষ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মো. শাকিল (৩১) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শুভকেও (২৮) গুলি করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। পুলিশ তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাকিল একই গ্রামের মো. সোলাইমান খোকনের ছেলে এবং পেশায় একজন থাই গ্লাস মিস্ত্রি ছিলেন। ঈদুল আযহার আগে শাকিলের সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮টার দিকে শাকিলসহ কয়েকজন ছয়ানীর গঙ্গাবর বাজারের ইসলামিয়া মার্কেটের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় এলাকায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে নয়জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে লাবিব নামে এক যুবককে জোরপূর্বক তুলে নিতে চেষ্টা করে। তখন শাকিলসহ আরো কয়েকজন তাদের বাঁধা দিলে সন্ত্রাসীরা শাকিলকে গুলি করে। পিস্তলের গুলি শাকিলের বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এ সময় তার ছোটভাই শুভ বড়ভাই শাকিলকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীর দল কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তাকে পিস্তলের বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করে। গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে তিন জনকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
তাৎক্ষণিক এলাকার লোকজন দুই ভাইকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের ছোট ভাই শুভ জানান, আটকসন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় গঙ্গাবর গ্রামের যুবক লাবিবের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিল। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বেগমগঞ্জ উপজেলার আগলাইয়ার পুর ইউনিয়নের নয়জন সন্ত্রাসী সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে এসে লাবিবকে গঙ্গাবর বাজারে এসে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিতে চেষ্টা করে। এসময় বাজারের লোকজনের সাথে শাকিল ও লাবিবকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা শাকিলকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। গুলি বুকে ও মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় তিনি তার ভাইকে বাঁচাতে গেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে অপহরণকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তার ভাই ও শাকিলকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত শাকিল বিবাহিত ছিলেন। তার ৮মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে ছিল দ্বিতীয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই সূত্রে জানা যায় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটের দিকে শাকিলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার বুকে ও মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানরতম বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্খানীয় এলাকাবাসী অস্ত্রধারী তিনজনকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রেখেছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছি।