বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগের কথা। কর্তা বংশের ওয়াছিল উদ্দিন কর্তা ছিলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। আজ থেকে ৫৬ বছর আগে সেই সময় মৌটুপি গ্রামে একটি সালিস বসে। ওয়াছিল সালিসে রায় ঘোষণা করেন। রায় চ্যালেঞ্জ করে বসেন সরকারবাড়ির আ. ওহাব সরকার।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, তখন ওয়াছিল উদ্দিন বলেন, ‘কর্তার রায় চ্যালেঞ্জ করছে সরকার। আমার আর কী দরকার?’ সেই থেকে কর্তা বংশ ও সরকার বংশের বিরোধ শুরু।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এই সালিসের কিছুদিন পর আ.

ওহাব সরকারকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর সঙ্গে কর্তা বংশের লোকজন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। তিন বছর পর ওয়াছিল উদ্দিন কর্তার ছেলে কফিল উদ্দিন কর্তা খুন হন। সেই ঘটনায় সরকার বংশের নাম আসে। সেই থেকে দুই বংশের বিরোধ পাকাপোক্ত হয়। এর পর থেকে বংশ দুটির লোকজন বিবাদ ছাড়া কোনো বছর পার করেছেন, এমনটা হয়নি। ৫৬ বছর ধরে চলছে এই বিরোধ।

৫৬ বছরে ঝরেছে ১৪ প্রাণ

গ্রামবাসীর দেওয়া তথ্যমতে, ৫৬ বছরে দুই পক্ষের ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। মামলা হয়েছে শতাধিক। সুযোগ পেলেই এক পক্ষ অপর পক্ষের আসবাব, গবাদিপশু, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ সর্বস্ব লুটে নিতে এতটুকু সময়ক্ষেপণ করে না। রান্নার চুলা ভেঙে ফেলে। শৌচাগার নিশ্চিহ্ন করে দেয়। টিউবওয়েল উপড়ে ফেলে। পাকা ফসলে দেয় মই।

সুযোগ পেলেই এক পক্ষ অপর পক্ষের আসবাব, গবাদিপশু, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ সর্বস্ব লুটে নিতে এতটুকু সময়ক্ষেপণ করে না

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে বিবাহবিচ্ছেদের চার দিনের মাথায় লাউখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

পঞ্চগড়ে স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর সন্তানদের রেখে গোপনে বিয়ে করে ঘর ছেড়েছিলেন এক নারী। দ্বিতীয় বিয়ের প্রায় এক মাস পর বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় বাড়ির পাশের লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের ধামোর মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেত থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম তানজিনা আক্তার (৩৫)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার দ্বিতীয় স্বামী মিনাল হোসেনের বাবা দিলু হোসেনকে (৫৫) হেফাজতে নিয়েছে আটোয়ারী থানার পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, তানজিনা আক্তারের প্রথম স্বামী মজিবর রহমান প্রায় দুই বছর আগে মারা যান। তাঁদের দুটি ছেলে আছে। এর মধ্যে প্রায় এক মাস আগে স্থানীয় যুবক মিনাল হোসেনকে (২৭) গোপনে বিয়ে করে পার্শ্ববর্তী মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। এর পর থেকেই মিনালকে ছেড়ে দিতে তানজিনার ওপর চাপ দিতে থাকে মিনালের পরিবার। গত ৩০ অক্টোবর তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকেই মিনালকে এলাকায় দেখা যায়নি।

পুলিশ জানায়, আজ সকালে ধামোর-মধ্যপাড়া এলাকার একটি লাউখেতে কয়েকজন লাউ তুলতে গিয়ে এক নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান। এ সময় স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশটি তানজিনার বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে বারঘাটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ও আটোয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ