ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের তিনটি ফ্ল্যাট, পাঁচটি বাড়ি ও ৯৯ দশমিক ৯৩ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া, তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৫১১ টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নামে রাজধানীর উত্তরায় থাকা ফ্ল্যাট ও মোট ১৮ কাঠার তিনটি প্লট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব আদেশ দিয়েছেন।

জিয়াউল আহসানের জব্দ করা ফ্ল্যাট ও বাড়ির মধ্যে মিরপুর ডিওএইচএসের ১৪৬০ ও ২১১০ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট, ২৬০০ বর্গফুটের উত্তরার ফ্ল্যাট, বরিশালের কোতয়ালী থানাধীন এলাকায় পৈত্রিক সম্পত্তিতে নির্মিত ৮ তলা বাড়ি, একই জেলার সদর থানা এলাকায় বাগানবাড়ি, পুকুরসহ বাড়ি এবং ১২৭০ বর্গফুটের একতলা পুরাতন বাড়ি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৮ শতাংশ জমিতে নির্মিত ৮ তলা ভবন রয়েছে। 

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের জব্দ করা তিনটি প্লট রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত। ১৫৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটি উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।     

দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ-পরিচালক রেজাউল করিম জিয়াউল আহসানের সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, জিয়াউল আহসান স্থাবর সম্পদ বিক্রয় এবং ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন ও স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব সম্পদ জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। 

হারুনের সম্পদ জব্দের আবেদন করেন দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিনি এসব সম্পদ বিক্রয় বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। এজন্য সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হারুনের এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া প্রয়োজন। 

ঢাকা/এম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ