ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালীকরণ এবং তামাকমুক্ত জাতি গঠনে যুব সমাজের ভূমিকা শীর্ষক যুব সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং এর আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত ও কার্যকরভাবে সংশোধনের দাবি তুলে ধরা এবং তরুণ প্রজন্মকে এই আন্দোলনের অংশ করে তোলা।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে ছাত্রদলের পরিচ্ছন্নতা অভিযান

‘মার্চ ফর কুয়েট’ এর হুশিয়ারি বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.

নিয়াজ আহমদ খান। এসময় তিনি ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ইয়ুথ ফোরাম তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে আইন সংশোধনের যে দাবি জানিয়েছে তার প্রতি সম্পূর্ণ সহমত দেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) শেখ মোমেনা মনি।

এ সময় তিনি বলেন, “সরকার ইতোমধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।”

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ মাহবুব কায়সার এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহফুজুর রহমান মিলন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং তামাকবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।

আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং-এর সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহার সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুল্লাহ্ আল মামুন।

যুব বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্টস সোসাইটির সভাপতি ডা. ইফতেখার আহমেদ সাকিব ও ইয়ুথ ইনফ্লুয়েন্সার শামীম হোসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িংয়ের সদস্য মো.তাসনিম হাসান আবির।

এ সময় তরুণ বক্তারা বলেন, বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনেক পুরনো এবং বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে তা কার্যকরভাবে তামাকজাত পণ্যের বিস্তার রোধ করতে পারছে না।

তারা জানান, তামাকজনিত রোগে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন, যা একটি জাতির জন্য মারাত্মক হুমকি।

এই সেমিনারের মাধ্যমে তরুণরা দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন ও প্রণয়নের দাবি জানান। উপস্থাপিত প্রধান দাবিগুলো হলো-সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ভেপ/ই-সিগারেটের মতো নতুন পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খূচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তামাকের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা ৯০% শতাংশ করা।

সেমিনারের পূর্বে অংশগ্রহণকারীরা প্রতীকী হিসেবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিতে পদযাত্রা ও স্বাক্ষর অভিযান পরিচালনা করেন, যা সরকারের প্রতি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের আহ্বান হিসেবে পাঠানো হবে।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ষ দ ধ কর অন ষ ঠ উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ