এ দেশে যেকোনো আর্থিক ধাক্কায় বিপুলসংখ্যক মানুষ গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। বিশ্বব্যাংক শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, এ বছর এ দেশের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ অতিগরিব হয়ে যেতে পারেন।

ক্রয়ক্ষমতার সমতা (পিপিপি) অনুসারে, দিনে ২ দশমিক ১৫ ডলার আয় করে প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা কেনার সামর্থ্য না থাকলে অতিদরিদ্র হিসেবে ধরা হয়; কিন্তু দৈনিক আয় ২ দশমিক ১৫ ডলারের একটু বেশি আয় করেন, এমন মানুষ বা পরিবারের সংখ্যা এ দেশে অনেক বেশি। তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের আয় যদি একটু কমে যায়, তাহলে তারা গরিব হয়ে যান।

হিসাব করে দেখা গেছে, এ দেশে এমন অনেক পরিবার বা মানুষ আছেন, যাঁরা বছরে দুই দিন কাজ না পেলেই গরিব হয়ে যান। তাঁরা দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যান। অনেকটা এমন—এই দেশে ‘টোকা’ দিলেই অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ে যান। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার মতো কোটি কোটি পরিবার নেই। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ শতাংশ পরিবার যেকোনো সময় গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

এদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত মজুরি ৩৯ মাস ধরে ক্রমাগত কমছে। কারণ, তিন বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি তথা জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই হারের মজুরি বাড়েনি। এতে কেনার সামর্থ্য কমেছে।

বড় বড় দাতা সংস্থার পূর্বাভাস অনুসারে, এ বছর ৪ শতাংশের মতো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এই প্রবৃদ্ধির প্রভাব দারিদ্র্য পরিস্থিতিতে পড়বে।

সামনের দিনগুলোতে শ্রমবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কৃষি খাতে তুলনামূলক মজুরি কম। তাই কৃষি থেকে স্থানান্তর করে শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না।

সার্বিকভাবে বলা যায়, প্রবৃদ্ধিতে মন্দা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান থাকলে গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়বে। তাই অর্থনীতিতে গতি আনার চেষ্টা করতে হবে।

জাহিদ হোসেন

সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

নেতানিয়াহু অঞ্চলজুড়ে আগুন লাগাতে চাইছেন: ইরানের প্রেসিডেন্টকে এরদোয়ান

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো মধ্যপ্রাচ্যে আগুন লাগাতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু ইরানে হামলা চালিয়ে পারমাণবিক আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন। গতকাল শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে এক ফোনালাপে এরদোয়ান এ কথাগুলো বলেছেন।

এরদোয়ানের দপ্তরের দেওয়া এক বিবৃতি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান বলেছেন, গাজায় হওয়া জাতিগত হত্যার ঘটনা থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরাতে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

ইরানি প্রেসিডেন্ট ছাড়াও সৌদি আরব, পাকিস্তান, জর্ডান ও মিসরের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেছেন এরদোয়ান। ইসরায়েল-ইরান সংঘাত এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।

শনিবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলই এখন এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তুরস্ক সরকারের যোগাযোগবিষয়ক দপ্তরের বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

দপ্তরের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, এরদোয়ান মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। সিসিকে এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েলের হামলা গভীরভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন করেছে। আইনের তোয়াক্কা না করার যে মনোভাব নেতানিয়াহুর মধ্যে দেখা গেছে তা বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকির।

এরদোয়ান আরও সতর্ক করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ