এ দেশে ‘টোকা’ দিলেই অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ে যান
Published: 24th, April 2025 GMT
এ দেশে যেকোনো আর্থিক ধাক্কায় বিপুলসংখ্যক মানুষ গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। বিশ্বব্যাংক শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, এ বছর এ দেশের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ অতিগরিব হয়ে যেতে পারেন।
ক্রয়ক্ষমতার সমতা (পিপিপি) অনুসারে, দিনে ২ দশমিক ১৫ ডলার আয় করে প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা কেনার সামর্থ্য না থাকলে অতিদরিদ্র হিসেবে ধরা হয়; কিন্তু দৈনিক আয় ২ দশমিক ১৫ ডলারের একটু বেশি আয় করেন, এমন মানুষ বা পরিবারের সংখ্যা এ দেশে অনেক বেশি। তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের আয় যদি একটু কমে যায়, তাহলে তারা গরিব হয়ে যান।
হিসাব করে দেখা গেছে, এ দেশে এমন অনেক পরিবার বা মানুষ আছেন, যাঁরা বছরে দুই দিন কাজ না পেলেই গরিব হয়ে যান। তাঁরা দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যান। অনেকটা এমন—এই দেশে ‘টোকা’ দিলেই অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়ে যান। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার মতো কোটি কোটি পরিবার নেই। বাংলাদেশে প্রায় ৫০ শতাংশ পরিবার যেকোনো সময় গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
এদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত মজুরি ৩৯ মাস ধরে ক্রমাগত কমছে। কারণ, তিন বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি তথা জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই হারের মজুরি বাড়েনি। এতে কেনার সামর্থ্য কমেছে।
বড় বড় দাতা সংস্থার পূর্বাভাস অনুসারে, এ বছর ৪ শতাংশের মতো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এই প্রবৃদ্ধির প্রভাব দারিদ্র্য পরিস্থিতিতে পড়বে।
সামনের দিনগুলোতে শ্রমবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কৃষি খাতে তুলনামূলক মজুরি কম। তাই কৃষি থেকে স্থানান্তর করে শিল্প খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না।
সার্বিকভাবে বলা যায়, প্রবৃদ্ধিতে মন্দা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান থাকলে গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়বে। তাই অর্থনীতিতে গতি আনার চেষ্টা করতে হবে।
জাহিদ হোসেন
সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরের ছয়টি আসনের ৪টিতে বিএনপির প্রার্থী হলেন যারা
গাজীপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, গাজীপুর-১ ও গাজীপুর-৬ আসনের প্রার্থীদের নাম পরে জানানো হবে।
আরো পড়ুন:
বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা হয়নি ঢাকা-২০ আসনে, অপেক্ষায় ৪ নেতা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিজ্ঞদের ওপর আস্থা রাখল বিএনপি
গাজীপুর-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন- গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে এম. মঞ্জুরুল করিম রনি। গাজীপুর-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু। গাজীপুর-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান এবং গাজীপুর-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক মিলন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এছাড়া, শরিক দলের জন্য কিছু আসন খালি রাখা হয়েছে।”
এর আগে, দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী সেই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তকরণ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে আনুষ্ঠানিক তফসিল।
এদিকে প্রার্থী ঘোষণার খবর পেয়ে গাজীপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। তবে গাজীপুর-৫ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক মিলন তানিয়া দলীয় নেতাকর্মীদের আনন্দ মিছিল করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন।
ঢাকা/রফিক/মাসুদ