ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ডের অন্তর্গত বেরাইদ এলাকায় ৭ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ পর্যায়ে, আরো ১৯ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের (বেরাইদ ও আশেপাশে এলাকা) চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে  তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “ডিএনসিসির নতুন ও পুরাতন এলাকাগুলোর মধ্যে কিছু বেসিক পার্থক্য রয়েছে। পুরনো এলাকার রাস্তা ও ড্রেনসহ অন্যান্য উন্নয়ন করা হয়েছে। কিন্তু সেসব এলাকায় সমস্যা রয়েছে মাঠ, পার্ক ও ফুটপাত এসব দখল। আমরা এগুলো দখলমুক্ত করতে কাজ করছি। আর ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের রাস্তা, ড্রেন, ফুটপাত এগুলো নির্মাণ করতে হবে। নতুন ওয়ার্ডগুলোকে পরিকল্পনা করে সাজানো হবে। কোন ইনজাস্টিস হবে না নতুন ওয়ার্ডগুলোতে। নতুন আরবানাইজেসন করা হবে কিন্তু পরিকল্পিত হবে।”

আরো পড়ুন:

ইশরাকের মেয়র পদের মেয়াদ নিয়ে যা জানা গেল

‘মে মাসে ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে ফুটবল টুর্নামেন্ট’

প্রশাসক আরো বলেন, “একসময় এগুলো ইউনিয়ন ছিল। অনেক জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়ে গেছে। এসব বাড়িঘর ভেঙে প্রশস্থ রাস্তা নির্মাণ করা বেশ সময়সাপেক্ষ। এসব আমরা করবো কিন্তু সময় লাগবে। বিশেষ করে দক্ষিণখান-উত্তরখানের মানুষ ধৈর্যহারা হয়ে গেছেন। তাদের চলাচলের জন্য রাস্তা নাই, জলাবদ্ধতা সমস্যা।আমি তাদের সাথে বসেছি। সমস্যাগুলো সমাধানে পরিকল্পনা করে কাজ করছি।”

এ সময় তিনি বলেন, “বেরাইদ ও আশেপাশের এলাকায় সরেজমিনে এসেছি। এই এলাকায় পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই এই এলাকা যেন দক্ষিণখান-উত্তরখানের মতো অপরিকল্পিত নগরায়ন না হয়ে যায়। এই এলাকার রাস্তা নির্মাণের অনেক আবেদন পেয়েছি। তাই আমি নিজে সরেজমিনে পরিদর্শনে এসেছি, আবেদন অনুযায়ী রাস্তাগুলোর যৌক্তিকতা আছে কিনা সেটি দেখছি। জনগণের জন্য লাভবান হলেই রাস্তা নির্মাণ করা হবে, অন্যথায় হবে না।”

তিনি বলেন, “বেরাইদ ও আশেপাশের এলাকায় চলমান কাজে কয়েকটি জায়গায় ত্রুটি পেয়েছি। ঠিকাদারকে ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে তাদের নিজ খরচে মেরামত করার জন্য। ঠিকাদার সঠিকভাবে কাজ না করলে আমরা ব্যবস্থা নিব, প্রয়োজনে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।”

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নগরবাসীকে নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেক জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়েছি মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানো হয় না। তাই যারা এই কাজটি করতো তাদের সাথে চুক্তি আর নবায়ন করা হয়নি। মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানো হচ্ছে কিনা সেটি তদারকিতে আমরা সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ডেডিকেটেড ডেঙ্গু ইউনিট করার বিষয়ে আমরা আহ্বান জানিয়েছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিজেদের বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করতে হবে। অন্তত সপ্তাহে দুইদিন যার যার বাড়ি ও আঙিনা পরিষ্কার করতে হবে। আমরা অভিযান করব, এডিসের লার্ভা পেলে জরিমানা করা হবে।”

ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে (নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে) বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসি প্রশাসক।

ডিএনসিসির নতুন এলাকায় হোল্ডিং ট্যাক্স বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা কর মেলা (হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের জন্য) আয়োজন করব। এই মেলায় ওয়ান স্টপ সেল থাকবে। সেখানে একদিনেই তাৎক্ষণিক হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে। মেলাতেই করা ছাড়ের আবেদনের ব্যবস্থা করব। ভোগান্তি ছাড়া স্বল্প সময়ে মেলাতে আপনারা হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে পারবেন। নতুন এলাকার জন্য শুধু গৃহকর নেওয়া হবে, এছাড়া অন্য কোনো কর নেওয়া হবে না।”

পরিদর্শনে অন্যান্যের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম বদরুদ্দোজা, নির্বাহী প্রকৌশলী ইশতিয়াক মাহমুদ প্রমুখ।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এনস স ন র ম ণ কর র জন য নত ন ও এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ