সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদকে ‘জুতাপেটা’ করতে চেয়েছেন কবির শিকদার নামে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টের মাধ্যমে এই ইচ্ছার কথা জানান তিনি। আওয়ামী লীগ নেতা কবির শিকদার কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

ফেসবুক পোস্টের বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

ফেসবুক পোস্টটিতে কবির শিকদার সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদের একটি ছবি সংযুক্ত করেন। ছবিটিতে হাছান মাহমুদকে একটি খাবার টেবিলে নানা পদের খাবার সামনে রেখে খেতে দেখা যায়। 

ছবিটির ক্যাপশনে আওয়ামী লীগ নেতা কবির শিকদার লিখেছেন, ‘রাজনীতি করি আর না করি .

.. যাদের অতীব অগ্রহণযোগ্য কথোপকথনে দলের গ্রহণযোগ্যতায় ধস নেমেছিল দেশে আসলে পাইলেই এদের জুটাপেটা করা হবে, কে কে আমার সাথে থাকবেন?’

তার ওই পোস্টে আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকদের সমর্থন জানাতে দেখা গেছে কমেন্টে। শাহনেয়াজ ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি কমেন্টে লিখেছেন ‘এরাই একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলকে ডুবিয়েছে।’

ওমর ফারুকী তাপস নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক লিখেছেন, ‘ওনার কথা শুনে মানুষ হাসতো। তাই ওনার নাম ছিল হাসাও মাহমুদ, তবে শেখ হাসিনা ওনাকে পছন্দ করতেন।’

রোমেন শুভ লিখেছেন ‘ইনশাআল্লাহ ভাই..এগুলোরে জুতাপেটা করলেও দলের যে ক্ষতি করে গেছে তা পোষানোর মতো না।’

শুক্রবার দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত ওই পোস্টে ৫০০ ব্যক্তি লাইক ও ২৪৪ জন নেতিবাচক কমেন্ট করেছেন। সরকার পতনের পর থেকে হাসান মাহমুদ বিদেশে আত্মগোপনে আছেন। 

ওই পোস্টের বিষয়ে কবির শিকদার বলেন, “এই হাছান মাহমুদরা বঙ্গবন্ধুর যে আওয়ামী লীগ, তৃণমূলের যে আওয়ামী লীগ, সেই আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করেছে। আমাদের প্রিয় নেত্রীকে ভুলভাল বুঝিয়ে এই টাইপের নেতাদের কারণেই আজকের আওয়ামী লীগের এই দশা। তারা বিদেশে আরাম আয়েশের জীবন পার করছেন।”

তৃণমূলের নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার জানিয়ে তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে প্রস্রাব করার প্রতিবাদে পোস্ট করার পর থেকে আমাকে দুইটা মামলার আসামি করা হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগ করেও কুমিল্লার দানব সাবেক এমপি বাহারের রোষাণলে ছিলাম। ঠিকমতো রাজনীতিটা করতে পারিনি। সেই ক্ষোভ থেকে ফেসবুকে পোস্ট করেছি। আরও যারা নেতা আছে তাদের বিরুদ্ধেও লেখা চলবে।”

ঢাকা/রুবেল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ সব ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপ‌দেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন: জামায়া‌তে ইসলামী

প্রধান উপ‌দেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূ‌সের স‌ঙ্গে বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তা‌রেক রহমা‌নের বৈঠ‌ককে স্বাভা‌বিক বল‌লেও, দুইজ‌নের যৌথ বিবৃতি‌ নি‌য়ে প্রশ্ন তু‌লে‌ছে জামায়া‌তে ইসলামী। 

শ‌নিবার জামায়া‌তের নির্বাহী প‌রিষ‌দের বৈঠ‌কের পর বিবৃ‌তি‌তে দল‌টি ব‌লে‌ছে, ‘যৌথ বিবৃ‌তি প্রদান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে প্রধান উপ‌দেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।’

দ‌লের আ‌মির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হ‌য়ে‌ছে ব‌লে বিবৃ‌তি‌তে বলা হ‌য়ে‌ছে। এ‌তে আরও বলা হয়, ‘১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের স‌ঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা‌কে জামায়াত খুবই স্বাভাবিক মনে করে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে এবং যৌথভাবে বৈঠক করেছেন।’

লন্ডন বৈঠ‌কের যৌথ বিবৃ‌তি নি‌য়ে প্রশ্ন তু‌লে জামায়াত ব‌লে‌ছে, ‘গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন প্রধান উপ‌দেষ্টা। তার এই ঘোষণার পর লন্ড‌ন সফরে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে জামায়াত ম‌নে ক‌রে। এর মাধ্যমে প্রধান উপ‌দেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন ক‌রে।’

‌লন্ডন বৈঠ‌কের যৌথ বিবৃ‌তিতে মধ্য ফেব্রুয়া‌রি‌তে নির্বাচ‌নের সম্ভাবনার কথা বলা হ‌য়ে‌ছে। জামায়াত এ প্রস‌ঙ্গে বিবৃ‌তি‌তে ব‌লে‌ছে, ‘আমরা মনে করি দেশে ফিরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে প্রধান উপ‌দেষ্টার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল।’

জামায়াত ফেব্রুয়া‌রি‌তে নির্বাচ‌নের বি‌রোধী নয় বিবৃ‌তি‌তে স্পষ্ট করা হয়। এ‌তে বলা হ‌য়েছে, ‘গত ১৬ এপ্রিল জামায়াত আ‌মির দলীয় দৃ‌ষ্টিভঙ্গী তু‌লে ধ‌রে জা‌নি‌য়ে‌ছি‌লেন ২০২৬ সালের রসজা‌নের পূর্বে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে।’ 

বিবৃ‌তিতে বলা হ‌য়ে‌ছে, ‘জামায়াত মনে করে সরকার প্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ ‌বিবৃ‌তি দেওয়ায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু একটি দলের সঙ্গে আলাপে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। জামায়াত আশা ক‌রে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে। সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য  নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠ‌কের দিন জামায়াত আনুষ্ঠা‌নিক প্রতি‌ক্রিয়া না জানা‌লেও দল‌টির শীর্ষস্থানীয় নেতারা সমকালকে বলেছি‌লেন, ‘জামায়াতই প্রথম বলেছে, রমজানের আগে নির্বাচন হওয়া উচিত। তাই নির্বাচনের যে নতুন সময়সীমা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু সরকার যেভাবে শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা অগ্রহণযোগ্য।’

জামায়াত নেতারা শুক্রবার রা‌তেই সমকাল‌কে ব‌লে‌ছি‌লেন, যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে– সরকার এবং বিএনপি সমশক্তি। এর পর আর সরকারের নিরপেক্ষতা থাকে না। এ বক্তব্য ড. ইউনূসকে জানাবে জামায়াত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে কী আলোচনা হলো
  • প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে
  • একটি দলের নেতার সঙ্গে যৌথ বিবৃতি প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
  • প্রধান উপ‌দেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন: জামায়া‌তে ইসলামী
  • একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে: জামায়াত
  • লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কিত বক্তব্যে দ্বিমত প্রিন্সের