পত্রিকা বিক্রেতা আনিস মিয়া ঠান্ডা প্রায় ২০ বছর ধরে গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করেন। সংসারের অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর জন্য সকাল থেকে পত্রিকা বিক্রির পর প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালাতেন। 

প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন আনিস। এদিন রাত দেড়টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় কয়েকজন অপরিচিত দুর্বৃত্ত যাত্রী সেজে ২০০ টাকা ভাড়া ঠিক করে তার ইজিবাইকে ওঠেন। গাড়িতে ওঠে তারা গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের দিকে গাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর দুর্বৃত্তরা আনিসের কাছে ইজিবাইকের চাবি চায়। চাবি দিতে না চাইলে প্রথমে ধ্বস্তাধস্তি হয়।

পরে দুর্বৃত্তরা পকেট থেকে ছুড়ি বের করে আনিসের পেটে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হন আনিস। পরে আনিসকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে ইজিবাইক নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। 

শুক্রবার ভোরে ওই পথ দিয়ে চলাচলের সময় এক পথচারী আনিসকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে চিনতে পারেন এবং তার বাড়িতে খবর দেন। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেন তিনি।

আনিসের স্বজনরা জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আনিসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে আনিস মারা যান।

তারা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হওয়ায় বর্তমানে আনিসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে দিয়েছে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করবে। মরদেহ দাফনের পর হত্যা মামলা করবে পরিবারের লোকজন।

আনিস মিয়া ঠান্ডা (৩৭) সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কিশামত ফলিয়া গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে এবং পেশায় পত্রিকা বিক্রেতা ছিলেন।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পত্রিকা বিতানের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান জানান, আনিস দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা শহরে পত্রিকা বিক্রি করে আসছেন। তিনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তা‌র করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, স্টেডিয়াম এলাকায় এক যুবক দুর্বৃত্তের আঘাতে নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এখনও কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ র ক ঘ ত হত য

এছাড়াও পড়ুন:

রামুতে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, শিশুসহ নিহত ৪

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার চার আরোহী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন নারী ও একজন শিশু।

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়া রেল ক্রসিং এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।

রামু থানার ওসি তৈয়বুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে পিকআপে বাসের ধাক্কা, আহত ২৫ 

গজারিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত

নিহতরা হলেন- কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের পূর্ব গোমাতলী এলাকার নাজির হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার (৪৫), তার মেয়ে এবং অটোরিকশা চালক হাবিব উল্লাহ। নিহত অপর নারীর পরিচয় জানা যায়নি। 

রশিদনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মাসুম জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ট্রেন দুপুরে ধলিরছড়া রেল ক্রসিং এলাকায় পৌঁছায়। এসময় ভারুয়াখালীমুখী যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশা রেললাইন অতিক্রম করছিল। ট্রেনটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার চালকসহ চারজন মারা যান।

তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম থেকে আসা কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিক্ষুব্ধ জনতা ঘটনাস্থলে আটকে রেখেছে। 

ওসি তৈয়বুর রহমান জানান, নিহতদের মরদেহ ঘটনাস্থলে রয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। 

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ