গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে কাফনের কাপড় ও খোলাচিঠি পাঠিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

জয়দেব ব্যানার্জি ওরফে জয়ন্ত নামের ওই ব্যবসায়ী উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ফুলহারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় খান্দারপাড় বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মুকসুদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার দিকে জয়দেব ব্যানার্জি ওষুধের দোকান থেকে বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে ঢোকার সময় ঘরের সামনে সিঁড়িতে একটি ব্যাগ দেখতে পান তিনি। ওই ব্যাগে কাফনের কাপড় ও একটি চিঠি ছিল। চিঠিতে জয়দেবের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। সাত দিনের মধ্যে টাকা না দিলে এবং বিষয়টি জানাজানি করলে ক্ষতি করার হুমকি দেওয়া হয়।

চিঠির বিষয়ে জয়দেব ব্যানার্জি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে একটি নম্বর থেকে আমার কাছে কল আসে। আমাকে বলে, “জয়ন্ত, আপনারা চিঠি পাননি?” কিছু সময় পরে একটি খুদে বার্তা পাঠায়। যেখানে লেখে, “চিঠি পেয়েছিস, টাকা দিবি না? টাকা না দিলে তোদের ক্ষণে ক্ষণে বিপদ আছে। আর এই কথা কাউকে বলবি না। বললে তোদের জানে মেরে ফেলব।” খুদে বার্তা পাঠানোর ৩০ মিনিট পর আমার বসতঘরের পাশে জ্বালানি কাঠ দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোক এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তা না হলে আমাদের বসতঘরে আগুন লেগে যেত। আমরা এ বিষয় নিয়ে খুবই আতঙ্কে আছি।’

মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, যে পরিবারের কাছে বেনামে চিঠি ও কাফনের কাপড় পাঠিয়েছে দুর্বৃত্তরা, পুলিশ ওই পরিবারের পাশে আছে। পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে। যে নম্বর থেকে কল ও খুদে বার্তা পাঠিয়েছে, ওই নম্বরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ব যবস য় জয়দ ব

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ