পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় হাজারো মানুষ, যোগ দিয়েছেন ট্রাম্পসহ বিশ্বনেতারাও
Published: 26th, April 2025 GMT
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং হাজারো শোকাহত মানুষের উপস্থিতিতে রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সমবেত ভক্তরা পিনপতন নীরবতায় অপেক্ষা করছিলেন। ভ্যাটিকানের স্থানীয় সময় সকাল ১০টা (বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা) বাজার পরপরই শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের কফিন নিয়ে আসা হয়। উপস্থিত জনতা তখন নীরবতা ভেঙে করতালি দেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ বিশ্বনেতাদের অনেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় শামিল হয়েছেন।
আর্জেন্টিনার বংশোদ্ভূত পোপ ফ্রান্সিস গত সোমবার ৮৮ বছর বয়সে মারা যান। তিনি ১২ বছর ধরে পোপের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় গির্জাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক পথে পরিচালিত করার লক্ষ্যে কাজ করেছেন ফ্রান্সিস।
শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পোপের মরদেহবাহী কফিনটি তিন দিন ধরে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা গির্জায় রাখা হয়েছিল। এ সময় ২ লাখ ৫০ হাজারের মতো মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
৫০টির বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অতিথির তালিকায় রয়েছেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতালি ও ভ্যাটিকান সিটির কর্তৃপক্ষ বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে, যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং ছোট নগররাষ্ট্রটির বিভিন্ন ভবনের ছাদে স্নাইপার মোতায়েন করা হয়েছে।৫০টির বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অতিথির তালিকায় রয়েছেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতালি ও ভ্যাটিকান সিটির কর্তৃপক্ষ বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে, যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং ছোট নগররাষ্ট্রটির বিভিন্ন ভবনের ছাদে স্নাইপার মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনপোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা৬ ঘণ্টা আগেপোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভ্যাটিকানের নয় দিনের আনুষ্ঠানিক শোককাল শুরু হয়েছে। শোককাল শেষে বিশ্বের ১৪০ কোটি ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের জন্য নতুন নেতা নির্বাচন করতে কার্ডিনালরা গোপন সমাবেশ (কনক্লেভ) করবেন।
পোপ ফ্রান্সিসের বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপের কারণে ধর্মীয় রক্ষণশীলদের অনেকে তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন। অভিবাসীদের প্রতি অন্যায় আচরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির বিরুদ্ধে তাঁর সোচ্চার ভূমিকা অনেক বিশ্বনেতাকেও অস্বস্তিতে ফেলেছিল। এরপরও ফ্রান্সিস তাঁর সহানুভূতি ও ব্যক্তিত্বের মাধুর্য দিয়ে অনেকের ভালোবাসা ও সম্মান অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন‘শান্তি অসম্ভব, যত দিন অস্ত্রের ঝনঝনানি পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে’২৩ এপ্রিল ২০২৫অভিবাসীদের গণহারে বিতাড়িত করার কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনও পোপের রোষের মুখে পড়েছিল। তবে পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ট্রাম্প ও তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া গতকাল শুক্রবার রাতে ভ্যাটিকানে পৌঁছান। ট্রাম্প পোপকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি বিশ্বকে ভালোবাসতেন।’
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটি তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। তিনি এখানে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে। এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক হতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে হট্টগোলের পর এটি হবে তাঁদের প্রথম বৈঠক।
আরও পড়ুনমারা গেলেন পোপ ফ্রান্সিস২১ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ত য ষ ট ক র অন ষ ঠ ন কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।