Risingbd:
2025-06-16@17:19:27 GMT

‘আকাশজয়ী’ মারুফ

Published: 26th, April 2025 GMT

‘আকাশজয়ী’ মারুফ

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের মারুফ মোল্লা স্থানীয়দের কাছে এখন ‘আকাশজয়ী’ নামে পরিচিত। দারিদ্র্য আর সীমিত সুযোগের মধ্যে নিজ ইচ্ছাশক্তির জোরে তিনি তৈরি করেছেন প্যারাগ্লাইডার। যা দিয়ে তিনি পাখির মতো আকাশেও উড়েছেন। মারুফের এই অসাধারণ কৃতিত্ব এখন গ্রামজুড়ে আলোচনার বিষয়।

ছোটবেলা থেকেই আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখতেন মারুফ। দারিদ্র্যের কারণে পড়ালেখা বন্ধ হলেও থামেনি তার স্বপ্নের যাত্রা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবের ভিডিও দেখে আর স্থানীয়ভাবে জোগাড় করা যন্ত্রপাতি দিয়ে মাত্র কয়েক মাসের পরিশ্রমে তিনি তৈরি করেছেন প্যারাগ্লাইডার। মারুফের উদ্ভাবনী মন শুধু প্যারাগ্লাইডারে সীমাবদ্ধ ছিল না, তিনি ইতোমধ্যে তৈরি করেছেন ইয়ারকুলার এবং হাত-পা ঘামানো সমস্যা সমাধানের ইলেকট্রিক্যাল থেরাপি মেশিন। 

প্রথমবার আকাশ ছোঁয়ার মুহূর্তটি জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অভিজ্ঞতা বলে জানান মারুফ। তিনি বলেন, “স্বপ্ন আর সাহস থাকলে অসম্ভব বলে কিছুই নেই।” প্যারাগ্লাইডার তৈরিতে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, খেজুরতলা গ্রামের একটি ফসলের মাঠে মারুফের আকাশে ওড়ার দৃশ্য দেখতে ভিড় জমিয়েছেন গ্রামবাসী। শুরুতে পরিবারের বকাবকি ও প্রতিবেশীদের সন্দেহের মুখেও তিনি দমেননি। 

মারুফের মা সামেলা বেগম বলেন, “আমার ছেলের এই কীর্তি অতুলনীয়। আমি ভাবতেই পারিনি আমার ছেলে এমন অসাধারণ কিছু করবে। একসময় যারা ওর কাজ নিয়ে সন্দেহ করত, এখন তারাই প্রশংসায় মুখর।”

গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, “মারুফের এই কাজ আমাদের গ্রামের জন্য গর্বের বিষয়। ওর মতো তরুণরা আমাদের অনুপ্রেরণা। মারুফ এখন গ্রামবাসীর কাছে আকাশজয়ী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।”

মারুফের স্বপ্ন এখন আরো বড়। তিনি একজন দক্ষ প্যারাগ্লাইডার হয়ে বাংলাদেশের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চান। পাশাপাশি, সরকারি সহযোগিতা পেলে তিনি তার প্যারাগ্লাইডার বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করতে চান। 

মারুফ বলেন, “আমি চাই আমার এই উদ্ভাবন দেশের কাজে আসুক। সরকারের সহায়তা পেলে আমি আরো বড় কিছু করতে পারব।”

মারুফের প্রশংসা করে স্থানীয় সমাজকর্মী ফারুক হোসেন বলেন, “তিনি (মারুফ) প্রমাণ করেছেন, অর্থের অভাব স্বপ্নের পথে বাধা নয়। মারুফের এই গল্প তরুণদের জন্য উৎসাহের উৎস। আমরা আশা করি, সরকার তার পাশে দাঁড়াবে।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ