বিবিসির ‘হিউম্যান প্ল্যানেট’ সিরিজের বিরাট ভক্ত ছিলাম। এই ডকুমেন্টারি সিরিজেরই একটি পর্বে বাজাউ সম্প্রদায়ের মানুষদের সম্পর্কে প্রথম জানি। সমুদ্রেই তাদের বাস। তাদের নির্দিষ্ট কোনো দেশ নেই। এককথায় সমুদ্রের যাযাবর এসব মানুষ জল আর নীল আকাশের মধ্যে নিজস্ব এক জগতে বাস করে। তাঁরা নাকি হাতে তৈরি কাঠের গগলস পরে কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়াই ১৫ মিনিট পর্যন্ত পানির নিচে অবস্থান করে মাছ ধরতে পারে!

তার পর থেকেই নানা সময় বাজাউদের দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। গত ঈদুল ফিতরের ছুটিতে শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনাটাকে বাস্তব রূপ দেওয়া গেল। দক্ষিণ ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও উপকূলে বিচ্ছিন্নভাবে বাস করে বাজাউরা। বাজাউদের গ্রামে যাওয়ার বিস্তারিত কোনো দিকনির্দেশনা অনলাইনে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এসব গ্রামে ভ্রমণের কোনো প্যাকেজ ট্যুরও এজেন্সিগুলোর নেই। প্রথমে ফিলিপাইনের ম্যানিলা থেকে বাজাউদের গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কয়েক দিনের চেষ্টার পর সেই পরিকল্পনা বাদ দিতে হলো। কারণ, এলাকাটা দুর্গম আর নিরাপত্তাঝুঁকিও আছে। রোমাঞ্চের টানে এই দূর দেশে এসেছি সত্য, কিন্তু নিরাপত্তাঝুঁকি তো আর নিতে পারি না।

বোর্নিও উপকূলে বাজাউদের নুসা তেঙ্গাহ গ্রাম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ