ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারও গোলাগুলি
Published: 27th, April 2025 GMT
ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে আবারও গোলাগুলি হয়েছে। এ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় রাতের মতো গোলাগুলি হলো। ভারতীয় সেনাবাহিনী আজ রোববার এ কথা জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে পাকিস্তান ওই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে ভারতের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে। ভারতীয় পুলিশের দাবি, পলাতক বন্দুকধারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক।
আজ রোববার ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করে, নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানি সেনারা বিনা উসকানিতে গুলি ছুড়েছেন। জবাবে ভারতীয় সেনারা পাল্টা গুলি ছুড়েছেন।
পেহেলগামের ঘটনায় নয়াদিল্লি এরই মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের প্রধান স্থলসীমা বন্ধ করে দিয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়েছে ও পাকিস্তানিদের ভিসা প্রত্যাহার করেছে।
আরও পড়ুনযেদিকে তাকাই, শুধু অবিশ্বাস: ভারতের বিভিন্ন শহরে ভয়ে ঘরবন্দী কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা৩ ঘণ্টা আগেজবাবে ইসলামাবাদ ভারতীয় কূটনীতিক ও সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে এবং নিজেদের অংশের প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। তবে শিখ তীর্থযাত্রীদের ভিসা বহাল রাখা হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে, যেন গঠনমূলক পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুনসিন্ধু পানি চুক্তি কী, ভারত কি এটি বাতিল করতে পারে১৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’