নিলামে ৩ লাখ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে টাইটানিকের যাত্রীর চিঠি
Published: 27th, April 2025 GMT
যুক্তরাজ্যে একটি নিলামে ৩ লাখ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে টাইটানিক জাহাজের এক যাত্রীর চিঠি। জাহাজটি ডুবে যাওয়ার কয়েক দিন আগে তিনি ওই চিঠি লিখেছিলেন।
কর্নেল আর্চিবল্ড গ্রেসির লেখা ওই চিঠি রোববার উইল্টশায়ারের একটি নিলাম হাউসে বিক্রি হয়েছে। যিনি চিঠিটি কিনেছেন, তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। চিঠিটি ৬০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। ধারণার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি দামে সেটি বিক্রি হয়েছে।
চিঠিটি সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়, সেই চিঠিতে ভবিষ্যতের কথা লেখা আছে। চিঠিতে কর্নেল গ্রেসি তাঁর পরিচিত একজনকে টাইটানিক জাহাজ সম্পর্কে নিজে মতামত তুলে ধরার পর লেখেন, তিনি যাত্রা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
চিঠিতে তারিখ লেখা হয়েছে ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল। ওই দিন কর্নেল গ্রেসি সাউদাম্পটন থেকে টাইটানিক জাহাজে উঠেছিলেন। এর পাঁচ দিন পর নর্থ আটলান্টিকে একটি বিশাল আকারের বরফখণ্ডের সঙ্গে সংঘর্ষের পর টাইটানিক ডুবে যায়।
ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে ২ হাজার ২০০ যাত্রী নিয়ে টাইটানিক জাহাজ নিউইয়র্কে যাত্রা শুরু করেছিল। মাঝপথে বরফখণ্ডের সঙ্গে সংঘর্ষে সেটি ডুবে যায়, মারা যান দেড় হাজারের বেশি যাত্রী।
জাহাজে প্রথম শ্রেণির যাত্রী ছিলেন কর্নেল গ্রেসি, সি৫১ কেবিনে বসে তিনি ওই চিঠি লিখেছিলেন। ১৯১২ সালের ১১ এপ্রিল জাহাজটি যখন আয়ারল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ভেড়ে, তখন চিঠিটি পোস্ট করা হয়। সেটির পোস্ট মার্কে তারিখও দেওয়া আছে—১২ এপ্রিল, লন্ডন।
চিঠিটি নিলাম করার সময় নিলাম পরিচালনাকারী সেটির বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, টাইটানিক জাহাজে বসে লেখা চিঠির মধ্যে এটিই সবচেয়ে তথ্যসমৃদ্ধ।
ডুবে যাওয়া টাইটানিকের বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের একজন কর্নেল গ্রেসি। পরে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি একটি বই লিখেছেন, নাম ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’। টাইটানিক দুর্ঘটনায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ মারা যান।
বরফঠান্ডা পানির ভেতর একটি উল্টে যাওয়া লাইফবোটের ওপর চড়ে তিনি নিজের প্রাণ রক্ষা করেছিলেন। ওই লাইফবোটে যাঁরা উঠতে পেরেছিলেন, তাঁদের অর্ধেকের বেশি প্রচণ্ড ঠান্ডায় মারা গেছেন বলেও তিনি ওই বইতে উল্লেখ করেছেন।
কর্নেল গ্রেসি বেঁচে গেলেও শারীরিক আঘাত এবং হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
১৯১২ সালের ২ ডিসেম্বর তিনি অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে যান। দুই দিন পর তাঁর মৃত্যু হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন কর ন ল গ র স ট ইট ন ক জ হ জ
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে