জলাবদ্ধতা নিরসনে অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হয়েছে দুদকের
Published: 27th, April 2025 GMT
খাল-নালায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) গাফিলতি আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার দুদকের একটি দল চসিক ও সিডিএ কার্যালয়ে যায়। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। পরে খাল-নালা এলাকা পরিদর্শন করে দুদক কর্মকর্তারা জানান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে খালপাড়ে প্রস্তাবিত রেলিংয়ের দৈর্ঘ্যের সঙ্গে পরিদর্শনকালে দৈর্ঘ্যের মিল পাওয়া যায়নি। আরও কিছু অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২-এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘সম্প্রতি খালে পড়ে একটি শিশু মারা গেছে। চসিক ও সিডিএর এ ক্ষেত্রে কোনো দায়দায়িত্ব আছে কিনা, মূলত আমরা সেটি যাচাই করছি। আমরা সিডিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট আরও যারা আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।’
শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সিডিএ কেন তদন্ত কমিটি গঠন করেনি, সেটা খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে দুদকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে একই ধরনের আরও ঘটনা ঘটেছে, সেসব বিষয়েও সিডিএ তদন্ত কমিটি করেনি। কেন কমিটি গঠন হলো না, সেটা আমরা দেখব।’
এ বিষয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো.
পরে দুদক টিম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে যায়। সেখানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে। এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিডিএ ৩৬টি খাল খননের কাজ করছে। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই জায়গা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সেখানে খাল ও নালার পাড়ে বাঁশের রেলিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। দুর্ঘটনার এক-দুই দিন আগে সিডিএ কিংবা যারা কাজ করছেন, তাদের কাজের জন্য এক্সক্যাভেটর নামাতে গিয়ে বাঁশের রেলিংটি ভাঙতে হয়েছে। এরপর দুর্ঘটনা ঘটে।’
গত ১৮ এপ্রিল রাতে নগরের চকবাজার কাপাসগোলায় হিজড়া খালে ব্যাটারিচালিত রিকশা উল্টে গেলে মায়ের হাত থেকে ছিটকে পড়ে ছয় মাসের শিশু সেহেরিজ প্রাণ হারায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত প রকল প দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’