বন্দরে মধ্যবয়সী নারীকে কুপিয়ে জখম
Published: 27th, April 2025 GMT
বন্দরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শিল্পী বেগম (৪৩) নামে এক মধ্য বয়সী নারীকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা আহত শিল্পী বেগমকে মারাত্মক কাটা জখম অবস্থায় উদ্ধার করে খানপুর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
এ ব্যাপারে আহত ভুক্তভোগী নারী প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করে সন্ত্রাসী হামলা ঘটনার ওই দিন দুপুরে হামলাকারি প্রান্ত, আমান উল্লাহ, পারুল বেগম ও আছমা বেগমের নাম উল্লেখ্ করে আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৮টায় বন্দর থানার নবীগঞ্জ কলেজ মাঠপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, বন্দর থানার নবীগঞ্জ কলেজ মাঠপাড়া এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদ মিয়ার মেয়ে শিল্পী বেগমের সাথে সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একই এলাকার আনার হোসেন মিয়ার ছেলে প্রান্তগং এর সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল।
এ ঘটনার জের ধরে রোববার সকাল ৮টায় প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী প্রান্ত একই এলাকার পান্না মিয়ার ছেলে আমান উল্লাহ, আনার মিয়ার স্ত্রী পারুল ও আমান উল্লাহ মিয়ার স্ত্রী আছমা বেগমসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ীি বে-আইনী ও অনধীকারে ভাবে বসত বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে।
ওই সময় শিল্পী বেগম প্রতিপক্ষকে বাধানিষেধ করলে ওই সময় উল্লেখিত প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে মরিচের ফাঁকি চোখে ছিটিয়ে
এলোপাথারী মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে নীলাফুলা জখমসহ শ্লীতাহানি করে। ওই সময় সন্ত্রাসী প্রান্ত মধ্যবয়সী নারী শিল্পী বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্য চাপাতি দিয়ে কোপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের ঈদযাত্রায় প্রাণহানি গত ঈদের চেয়ে বেশি: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ১১৮২ জন আহত হয়েছে। একই সময়ে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ১২ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৫টি দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত ও ১১৯৪ জন আহত হয়েছে।
ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৩১ মে থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৪ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ১১৮২ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৪ সালের ঈদুল আজহায় ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৬ জন নিহত ও ৭৬২ জন আহত হয়েছিল। বিগত ঈদুল আজহার সাথে তুলনা করলে সড়ক দুর্ঘটনা ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ, প্রাণহানি ১৬ দশমিক ০৭ শতাংশ, আহত ৫৫ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এতথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সড়কে দুর্ঘটনা ও মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে হলে ঈদের আগে কমপক্ষে ৪ দিনের সরকারি ছুটি থাকা দরকার। ঈদের যাতায়াত ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। সবার আগে আমাদের গণপরিবহন ও ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে, ছোট যানবাহন মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। প্রশিক্ষিত দক্ষ চালক, ফিটনেস বিহীন যানবাহন, মানসম্মত সড়কের পাশাপাশি আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি।”
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি, অপহরণ ৩
রামুতে বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৩
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দেশের সড়ক-মহাসড়কের বৃষ্টির কারণে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বেপরোয়া যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। ঈদের পরে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা বিরামহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালাতে গিয়ে সংগঠিত হয়েছে। ফলে এসব দুর্ঘটনায় সিংহভাগ খাদে পড়ে ও দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনের লেগে যাওয়ার ঘটনা বেশি ঘটেছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি এবারের ঈদেও চরমে ছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনদের ঈদে বাড়ি যাতায়াত করতে হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৩৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত, ১৪৮ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৬১ জন চালক, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৮ জন পথচারী, ৪০ জন নারী, ৩০ জন শিশু, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫ জন শিক্ষক, একজন চিকিৎসক, একজন প্রকৌশলী, ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কার-মাইক্রো, ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।
দুর্ঘটনার ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪০ দশমিক ৬৩ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২০ দশমিক ০৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, দশমিক ৭৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনে ও ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, দশমিক ৭৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও দশমিক ৭৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাসুদ, সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, ড্রাইভারস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. বাদল আহমেদ, জিএম মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
ঢাকা/এম/এসবি