জুলাই আন্দোলনে শহীদ ফয়জুলের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় শ্রমিক দলের নেতা গ্রেপ্তার
Published: 27th, April 2025 GMT
ঢাকার কেরানীগঞ্জে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ ফয়জুল ইসলামের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলায় শ্রমিক দলের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার তারানগর ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কেরানীগঞ্জ থানা শ্রমিক দলের সদস্য এবং মামলার ২ নম্বর আসামি।
গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কেরানীগঞ্জের বাহেরচর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে শহীদ ফয়জুল ইসলামের কবর ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ফয়জুলের মা মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন। এদিকে আজ রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া। তিনি দ্রুত কবর সংস্কারের নির্দেশ দেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে মিরপুর ১০ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ফয়জুল ইসলাম। পরবর্তী সময়ে কেরানীগঞ্জের বাহেরচর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে লাশটি দাফন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে ওই কবরের চারপাশে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছিল।
ফয়জুলের বড় ভাই মোহাম্মদ রাজু বলেন, ‘ভাইয়ের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ আনোয়ার নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা চাই এই ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হোক। যাতে শহীদদের আর কেউ অসম্মান করতে না পারেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেরানীগঞ্জ মডেল থানার আহ্বায়ক শাফায়েত ঢালী বলেন, শহীদ ফয়জুলের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার আনোয়ার শ্রমিক দলের সক্রিয় কর্মী। তাঁর সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। তিনি বলেন, আগেও এক শহীদের কবর ভাঙচুর করেছিল দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় তাঁদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। শিগগিরই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরমানুল হক ডাবলু বলেন, শহীদ ফয়জুলের কবর ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এর আগে গত ১৫ মার্চ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর করেরগাঁও এলাকায় জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া সায়েম হোসেনের কবর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ফয়জ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।
এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।
জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’
কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।