পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের সন্দেহ, কারণ কী
Published: 27th, April 2025 GMT
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দ্রুত একটি চুক্তিতে পৌঁছানো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই যুদ্ধের শেষ চান কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে তাঁর মনে। যদিও এক দিন আগেই চুক্তি নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ শেষে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে ফেরেন ট্রাম্প। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘বেসামরিক এলাকা, শহর ও মফস্সলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কোনো কারণ নেই পুতিনের। এতে আমার মনে হচ্ছে তিনি হয়তো চান না যুদ্ধ শেষ হোক। তিনি শুধু আমার সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন। তাঁকে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ভিন্নভাবে সামাল দিতে হবে।’
গত কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো পুতিনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা একটি পোস্টে তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে লিখেছিলেন, ‘থামুন।’ ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ওই মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে শুক্রবার মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। সেদিন ট্রাম্প বেশ আশা জাগিয়ে বলেছিলেন, আলোচনা করার জন্য ‘আজ বেশ ভালো একটি দিন’। রাশিয়া-ইউক্রেন একটি চুক্তি সই করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তির খুব কাছাকাছি, বললেন ট্রাম্প২৬ এপ্রিল ২০২৫২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এককাট্টা সমর্থন পেয়ে আসছিল কিয়েভ। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার বদলে উল্টো দেশটির ওপর চড়াও হন তিনি। বারবার সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে।
যদিও এরই মধ্যে যুদ্ধ থামাতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এর অংশ হিসেবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছে মার্কিন প্রতিনিধিদল। ট্রাম্প নিজেও জেলেনস্কির সঙ্গে দুবার বৈঠক করেছেন। এর মধ্যে প্রথমবার ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে। আর দ্বিতীয়বার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়—শনিবার।
আরও পড়ুন কুরস্ক ‘পুনর্দখলে’ রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সেনারা, প্রশংসায় মাতল মস্কো২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপানামা ও সুয়েজ খাল বিনা মাশুলে ব্যবহার করতে চান ট্রাম্প৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।