দু’মাস দেরিতে ২৪ বাগানে চায়ের উৎপাদন শুরু
Published: 28th, April 2025 GMT
মৌসুম শুরুর দু’মাস পর চুনারুঘাট উপজেলার ২৪টি বাগানে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে চায়ের উৎপাদন শুরু করা হলেও চলতি মৌসুমে তা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় উপজেলার অধিকাংশ বাগানে গাছ নষ্ট হয়। অন্যগুলোতে দেখা মেলেনি নতুন পাতা ও কুঁড়ির।
চলতি সপ্তাহে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির পর পরই প্রতিটি বাগানে চায়ের কচি পাতা ও কুঁড়ির দেখা মেলে। এর পরেও শুরু হয় পাতা উত্তোলন ও উৎপাদন কাজ। চলতি মৌসুমে চুনারুঘাটের লস্করপুর ভ্যালির ২৪টি বাগানে চা পাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ কোটি ৩০ লাখ কেজি। তবে মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে বাগানগুলো সঠিক সময়ে উৎপাদনে যেতে পারেনি। এতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যাপারে উদ্বেগ কাটেনি কর্তৃপক্ষের।
এসব বাগান কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং স্থানীয় চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দেরিতে হলেও বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এরই মধ্যে বাগানগুলোর বিবর্ণ রূপ মুছে গিয়ে প্রাণবন্ত সবুজের আধিপত্য নজর কাড়ছে। আরও কিছু সময় টানা বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও বদলে যাবে।
বাগান মালিকরা বলছেন, দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস পর বৃষ্টির স্পর্শ পেল চা বাগানগুলো। এর আগেই উপজেলার লস্করপুর ভ্যালির ২৪টি বাগানের অধিকাংশেই ৪০ ভাগ চারাগাছ ও ১০ ভাগ পরিণত চা গাছ খরায় পুড়ে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটি বাগানে কৃত্রিম সেচ ব্যবস্থা থাকায় মার্চ মাস
থেকে সেখানে সীমিত আকারে উৎপাদন শুরু করলেও চলতি মাসেই সবগুলো বাগানে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চন্ডিছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিমুর রহমান বলেন, দেরিতে হলেও বৃষ্টির দেখা পেয়ে চা শ্রমিকরা খুশি। তারা পুরোদমে পাতা তোলার কাজে ব্যস্ত। বাগানের নির্ধারিত কারখানায় চায়ের উৎপাদনও শুরু হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা থাকলেও হাল ছাড়বেন না তারা। সামনের দিনগুলোতে প্রত্যাশিত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলে ভালো কিছু আশা করা যাবে।
লালচান্দ চা বাগানের চা শ্রমিক দিপালি ভৌমিজ বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকেই চা পাতা ও কুঁড়ি উত্তোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট খরায় তা পিছিয়ে যায়। বৃষ্টি ঝরায় গাছগুলোতে সবুজ কচি পাতা আসছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’