ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী, দুই মেয়েসহ আটজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

যে আটজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন তারিক আহমেদ সিদ্দিকের স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকী, তাঁর মেয়ে প্রচ্ছায়া লিমিটেডের পরিচালক বুশরা সিদ্দিক ও নওরীন তাসমিয়া সিদ্দিক। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে প্রচ্ছায়া লিমিটেডের পরিচালক শেহতাজ মুন্সি খান, শহীদ উদ্দিন খান, পেইরাজা পিনাজ খান, ফারজানা আনজুম ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকের ভাই শফিক আহমেদ সিদ্দিকের বিদেশযাত্রায়ও।

আরও পড়ুনহাসিনা-রেহানাদের ৪ বাগানবাড়ি, আছে ডুপ্লেক্স ভবন, শানবাঁধানো ঘাট, পুকুর০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহেনা, রেহেনার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রচ্ছায়া লিমিটেডের অংশীদারেরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার আদেশ দেন আদালত।

আরও পড়ুনতারিক সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক ও সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু১৫ জানুয়ারি ২০২৫

২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর থেকে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগপর্যন্ত তারিক আহমেদ সিদ্দিক তাঁর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুনসাবেক উপদেষ্টা জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত২২ অক্টোবর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ক আহম দ স দ দ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ